ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের মতামত চেয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
ভোজ্য তেল পরিশোধন কারখানার মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ মুস্তাফা হায়দার বলেন, ২০১১ সালে সরকার একটি নীতিমালা করে। সয়াবিন তেলের দাম সময়ে সময়ে বৈশ্বিক বাজার ও অভ্যন্তরীণ খরচের সঙ্গে সমন্বয় করার কথা। এখন তা ১৫ দিন পর পর সমন্বয় করার কথা। ডলারসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ার যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, আমরা শুধু বলেছি সরকারের নীতিমালা মেনেই দর সমন্বয় করতে। তবে সরকার রোজায় পণ্যটির দাম বাড়াতে চাইছে না। সেজন্য রোজা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভ্যাট ছাড় অব্যাহত রেখেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, দাম বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত নেই। বর্তমান দরেই বিক্রি করতে হবে।
রামপুরা ভাই ভাই স্টোরের জামাল হোসেন বলেন, কোম্পানিগুলো ঠিকঠাক মতো তেল দিচ্ছে না। মাঝে মাঝে দু-এক কার্টন তেল দিচ্ছে, যা চাহিদার তুলনায় অনেক কম।
কাওরান বাজার কিচেন মার্কেটের আব্দুর রব এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক একরামুল হক নাঈম বলেন, সাপ্লাই কম। তেল এক গাড়ি করে পাই। দিনেই শেষ হয়। বেশি চাচ্ছি, কিন্তু কোম্পানি দিচ্ছে না। ভোজ্য তেল আমদানিকারক ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের পরিচালক (রেগুলেটরি অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স) বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, তেল সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। প্রতিদিন কোন ডিলারকে কতো পরিমাণ তেল দিলাম তা সরকারের অফিসগুলোতে জানিয়ে দিচ্ছি।
এদিকে অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসের আমদানি তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনি এবার এসেছে ৪ লাখ ২৩ হাজার ৯৯৪ টন। আগের অর্থবছরে একই সময়ে এসেছিল ৬ লাখ ৯ হাজার ৫৩২ টন। পরিশোধিত ও অপরিশোধিত ভোজ্য তেল আমদানি হয়েছে ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৮১৪ টন। গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১১ লাখ ৩ হাজার ৯০ টন।
শুল্ক কমানোর প্রভাব পড়েছে চিনির বাজারে। এক মাসে দাম কমেছে সাড়ে তিন শতাংশ পর্যন্ত। পাশাপাশি রমজান সামনে রেখে প্যাকেট চিনি বিক্রি করছে সরকারি মিলগুলো। টিসিবিও কম দামে চিনি বিক্রি করছে। তবে রোজায় কেউ যাতে কারসাজি করতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়েছেন ভোক্তারা। চিনির দাম স্থিতিশীল থাকলেও কতোদিন থাকবে? রমজান পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে কিনা তা নিশ্চিত হতে পারছেন কেউ।
কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, বাজারে একাধিক সংস্থা তদারকি করে। কিন্তু ভোক্তা এ থেকে কোনো সুফল পাচ্ছে না। এক্ষেত্রে সরকারের সংস্থাগুলোর দায়িত্বশীলতার যথাযথ গ্যাপ রয়েছে। তিনি বলেন, পণ্যের দাম বাড়লেই কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু যে স্তরে কারসাজি হয়েছে, সেই স্তরে মনিটরিং হয় না।