রাষ্ট্রীয় ভূমি দখল ও রূপসার ভূমি দস্যু ইদ্রিস ড্রাইভার

 

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের অপশাসন দুর্নীতি ও মানুষের সম্পদ দখল, শহর, নগর, বন্দর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতেও এই দুর্নীতি বিরাজমান, এমনকি রাষ্ট্রীয় জমিও তারা দখল করে নিজেদের ব্যক্তিমালিকানায় ব্যবহার করতো। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাদের সাথে সুসম্পর্ক এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনৈতিক কাজে সমর্থন এবং সাহায্য করার ফলে তারা করতে পাড়তো যা ইচ্ছা তা। আজকের প্রতিবেদনের তুলে আনার চেষ্টা করব এমনই এক জঘন্য ভূমিদস্যুর কথা যার হাত থেকে যেমন রেহাই পেত না অসহায় গরীব ও সাধারণ মানুষ তেমনি রেহাই পায়নি রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সম্পদ এবং ভূমি। বলছি সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার মেছরা ইউনিয়নের রুপসা গ্রামের ভূমি দস্যু মোহাম্মদ ইদ্রিস ড্রাইভার এর কথা। গ্রামের সাধারণ কৃষক পরিবারের কাছে তিনি ছিলেন এক আতঙ্ক, কেননা যখন-তখন তার নামের দখল হয়ে যেত বিভিন্ন জমি ও জমির ফসল। তার এ কাজে তিনি সহযোগিতা পেতেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতা এলাকার চেয়ারম্যানসহ এলাকার মেম্বার এবং আরো অনেকের।কারণ তারাও এই অপকর্মের সমান অংশীদার এবং ভাগ পেতো।বিগত দুটি অবৈধ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিনা ভোট চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মোহাম্মদ মজিদ মাস্টার। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর পরই তিনি হয়ে ওঠেন গ্রামের মানুষের কাছে এক ভয়াবহ আতঙ্ক এবং তার দুর্নীতির মাত্রা ছড়িয়ে যায় সর্বত্র।সেই মজিদ চেয়ারম্যানের সহযোগিতাতেই ইদ্রিস ড্রাইভার মানুষের ভূমি দখল, কৃষকের ফসল বাজেয়াপ্ত, গাছ কেটে নেওয়া, পুকুর চুরি এসবের পরিমাণ ক্রমে বাড়তে থাকে। ক্ষমতাশীন হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোনো প্রতিবাদ বা কোন কথা বলতে পারেনি যে গুটিকজন মানুষ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং কথা বলেছে তাদেরকে পোহাতে হয়েছে চরম দুর্দশা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন সময় এসব বিষয়ে তদন্ত করতে আসলেও তাদের রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড থাকার কারণে সব সময় তারা থেকে সে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

মেছড়া কেন্দ্রীয় হাট রূপসা বাজার একটি ইউনিয়নের হাটের জমিটি থাকে খাস বা সরকারি মালিকানাধীন । মজিদ চেয়ারম্যান জোর করে হাটের জমি পশ্চিম ও পূর্ব দিকে অন্যের জমিতে কুটি দিয়ে নির্ধারন করেছিলেন যা সঠিক নয়। সঠিক ভাবে জমি মাপলে ইদ্রিস ড্রাইভারের নামের জমির
মধ্যে প্রায় ১বিগা হাটের জমি পু্র্ব দিকে আছে।
রূপসা হাটের প্রায় এক বিঘার উপরে জমি দখল করে নেয় ইদ্রিস ড্রাইভার এবং গড়ে তোলে বেশ কয়েকটি দোকান। যা তিনি অন্যদের ভাড়া দিতেন এবং সেখান থেকে মাসিক মোটা অংকের একটা অর্থ ইনকাম হতো তার। বিভিন্ন তথ্যে জানা যায় এই ইনকাম হওয়ার টাকার বেশ কিছু অংশ দ্বিতীয় হতো তাকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা এবং ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বিএনপি’র পক্ষে নির্বাচন করতেন এলাকার জনপ্রিয় চেয়ারম্যান মোঃ আলম চেয়ারম্যান তার বাড়িতে বন্দুকসহ হামলায় জড়িত ছিলেন এই ইদ্রিস ড্রাইভারের ছেলে এমন কথাও শোনা যায় লোকমুখে। বিরোধীদলীয় বিভিন্ন নেতাদের বিপক্ষে তার সন্তানের এমন আগ্রাসী ও সন্ত্রাসীপূর্ণ আচরণের ফলেই এমন সুবিধা ভোগ করতে পারতেন বলে জানা গেছে।

ইদ্রিস ড্রাইভারের ছেলে মোহাম্মদ রাজু আহমেদ বাজারে ওয়াইফাই ব্যবসার নাম করে বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে একটা সন্ত্রাসী গ্রুপ তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন গত এক দুই বছর ধরে। ৫ই আগস্ট ছাত্র ও জনতার বিপ্লবের মুখে পতন হয় আওয়ামী লীগের সরকারের এবং পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা পালানোর সাথে সাথে রূপসা এলাকা থেকে রূপসা এলাকা থেকে পালিয়ে যান ইদ্রিস ড্রাইভার সহ তার সন্তান। বিগত বছর গুলিতে এই ইদ্রিস ড্রাইভার এর ভূমি দখল ফসললুট পুকুর দখল এসবের যারা ভুক্তভোগী তারা তাদের ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছেন এবং তাদের দখলকৃত ভূমি যাতে তাদেরকে ফেরত দেওয়া হয় এই প্রত্যাশা তাদের বর্তমান সরকারের কাছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরা যাতে তাদের ভূমির ফেরত পেতে সাহায্য করে সেই প্রত্যাশা তাদের। আর বিগত বছরগুলোতে মানুষদের উপর চালানো এই অত্যাচার-নিপীড়ন এর যাতে সুষ্ঠ তদন্ত এবং তাদেরকে সর্বোচ্চ বিচারের আওতায় আনা হয় এবং বিগত বছরগুলোতে কৃষকদের যে সকল ক্ষতি হয়েছে এই অপরাধীদের জরিপানা করার মাধ্যমে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়া হয় এমনটাই প্রত্যাশা গ্রামবাসীদের। মেছড়া ও রূপসাবাসী কোন বিশৃঙ্খলা ও বিবাদ চায়না তারা চায় সুষ্ঠ তদন্ত ও ন্যায় বিচার।

সর্বশেষ