PES 2013 Download for Windows 7/8/10/11 - PES2013

Download PES 2013 for Windows 7/8/10/11 and dive into the exciting world of soccer with PES2013. Experience realistic gameplay and enhanced football simulation.
Get it now for FREE !

Pes 2013 Download
পর্যালোচনায় বসতে যাচ্ছে ৪ মন্ত্রণালয়

শ্রম অধিকার নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্রের নয়া নীতি বাংলাদেশের ওপর কার্যকর হওয়ার কারণ দেখছেন না সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল। কারণ শ্রম অধিকারসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) রোডম্যাপের ৮০-৯০ শতাংশ ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। শ্রমিকদের বেতন বেড়েছে ৫৪-৫৬ শতাংশ। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের লেবার ওয়ার্কিং গ্রুপ, টিকফা, আইএলও’র গভর্নিং পরিষদ এবং ইইউ প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। অগ্রগতি দেখে সংশ্লিষ্টরা সন্তুষ্ট হয়েছেন। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশের পোশাক খাতের শ্রমিক আন্দোলনের নেতা কল্পনা আক্তারের নামটিও উল্লেখ করে বলেছেন, ‘কল্পনা জানিয়েছেন-ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস তার পক্ষে দাঁড়িয়েছে। পরামর্শকের ভূমিকা রেখেছে। এজন্য তিনি (কল্পনা) এখনো বেঁচে আছেন।’ যুক্তরাষ্ট্রের এই স্টেটমেন্টের ব্যাপারে যৌক্তিকতা থাকলে সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। আর সেজন্য পররাষ্ট্র, বাণিজ্য, শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে সরকারের অবস্থান। শিগগিরই হবে এ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে এসব তথ্য।

এদিকে বিশ্বজুড়ে শ্রম অধিকার নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতি দুশ্চিন্তায় ফেলেছে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের। সরকারের অবস্থানের পাশাপাশি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা এক ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা ভাবছেন কোনো কারণে শ্রম অধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নতুন নীতিটি বাংলাদেশের ওপর কার্যকর করলে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এ দেশের রপ্তানি খাতে।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন, শ্রম অধিকার ও শ্রমিকদের মানসম্মত জীবনযাপন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি স্মারকে (প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডাম) সই করেছেন। গত বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, বিভিন্ন দেশের সরকার, শ্রমিক, শ্রমিক সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন, সুশীল সমাজ ও বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করে আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেন, যারা শ্রমিকদের অধিকারের বিরুদ্ধে যাবেন, শ্রমিকদের হুমকি দেবেন, ভয় দেখাবেন, তাদের ওপর প্রয়োজনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

বিষয়টি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মো. এহছানে এলাহী রোববার যুগান্তরকে বলেন, আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে যদি প্রতিক্রিয়া দেওয়ার থাকে সেক্ষেত্রে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের একটি লেবার ওয়ার্কিং গ্রুপ আছে, তারা প্রতি সপ্তাহে আমার সঙ্গে দেখা করেছে। শ্রম অধিকার নিয়ে তাদের এমন কোনো সমস্যা নেই যা সমাধান করা হয়নি। এরপরও যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের শ্রম অধিকার নিয়ে স্টেটমেন্ট দিয়েছে। দেশটি দিতে পারে, কোনো সমস্যা নেই। কল্পনা আক্তার নামে একটি মেয়ের নাম বলা হয়েছে। আমরা কোনোদিন দেশ থেকে শুনিনি তার জীবনমালের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। দেশে ৫৮টি লেবারসংক্রান্ত সংস্থা আছে, কোথাও সে অভিযোগ করেনি। এক্ষেত্রে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে এ ইস্যুতে সরকারের অবস্থান ঠিক করা হবে।

জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো হয়েছে। শ্রম অধিকার পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। এরপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো কোনো অবস্থান নেই। তবে এটি পুরোপুরি রাজনৈতিক ইস্যু। বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেখবে।

শ্রম অধিকার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের ঘোষণা এমন এক সময়ে এসেছে, যখন বাংলাদেশে পোশাক খাতে ন্যূনতম মজুরি নিয়ে অস্থিরতা চলছে। শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আবার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি কার্যকর করেছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রম অধিকারবিষয়ক নতুন এ নীতি রপ্তানিকারকদের দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

শ্রম অধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতির বিষয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের বড় দুশ্চিন্তার কারণ হলো, এ দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির বড় গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে পোশাক রপ্তানিতে তৃতীয় শীর্ষ দেশ বাংলাদেশ। পোশাক ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত মৎস্য, চামড়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক পণ্যসহ নানা ধরনের পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে মোট ৯৭০ কোটি মার্কিন ডলারের বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যার মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৮৫১ কোটি ডলার। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চলতি বছর পোশাক রপ্তানি কিছুটা নেতিবাচক ধারায় রয়েছে। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই থেকে অক্টোবর এ চার মাসে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ শতাংশের বেশি কমেছে।

জানতে চাইলে বিকেএমই’র নির্বাহী সভাপতি মো. হাতেম রোববার চীনের সাংহাই থেকে মোবাইলে যুগান্তরকে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশের কল্পনা আক্তার নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছে সেটি পুরোপুরি রাজনৈতিক ইস্যু। বাংলাদেশের শ্রম অধিকারের সব ধরনের সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ থেকে সর্বোচ্চ স্ট্যান্ডার্ড পর্যায়ে আছে আমাদের শ্রম অধিকার পরিবেশ। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ট্রেড ইউনিয়ন এ দেশে গড়ে উঠেছে। ফলে শ্রম অধিকার নিয়ে এ ধরনের ইস্যু সৃষ্টি করার কোনো পথ নেই। আমাদের প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম থেকে বেশি ট্রেড ইউনিয়ন এ দেশে বেশি আছে। আফ্রিকার অনেক দেশ আছে যেখানে ট্রেড ইউনিয়ন নেই। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে ডিউটি ফ্রি সুবিধা পাচ্ছে। অথচ বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ট্রেড ইউনিয়নের দেশ হয়েও সে সুবিধা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পাচ্ছে না। তাই আমরা বলব, শ্রম অধিকারের ইস্যুতে নয়, রাজনৈতিক ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছে।

শ্রম মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, শ্রম অধিকার রক্ষায় সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে সবাইকে জানানোর পর সন্তুষ্ট হয়েছে। হয়তো সংশোধনের ক্ষেত্রে পুরোপুরি সবার শর্ত পালন সম্ভব হয়নি। ইতোপূর্বে টিকফা, আইএলও’র গভর্নিং এবং ইইউ প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। সবাইকে শ্রম ইস্যু নিয়ে আমরা আমাদের কার্যক্রমের অগ্রগতি ২০১৩ থেকে এখন পর্যন্ত তা জানিয়েছি। শ্রম আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে হয়তো বিশটি প্রস্তাব এসব সংস্থা দিয়েছে, আমরা অর্ধেক নিয়েছি এবং অর্ধেক পারিনি। পরবর্তীকালে তা অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এভাবে শ্রম অধিকার সংক্রান্ত প্রায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকার রাষ্ট্রদূত শ্রম ইস্যুসংক্রান্ত কিছু সমস্যা নিয়ে ৮-১০ বার এসেছে। সেগুলোও সমাধান করেছি। এরপরও এ ধরনের স্টেটমেন্ট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এটি রাজনৈতিক ইস্যুতে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া হয়েছে।

সূত্র:  যুগান্তর

সর্বশেষ