মজুরি দেওয়ার সক্ষমতা নেই ৩৯ পোশাক কারখানার
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে দেশের তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রম অসন্তোষ থামছে না। চলমান অস্থিরতায় অনেক কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত। মজুরি দেওয়ার সক্ষমতা নেই ৩৯ কারখানার। এমন পেক্ষাপটে ক্ষতিগস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়েছে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ।গতকাল সোমবার অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টার কাছে এই সহায়তা চেয়ে চিঠি দিয়েছে সংগঠনটি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য মিলেছে।

বিজিএমইএর চিঠিতে বলা হয়, সরকার পরিবর্তনের পর থেকে তৈরি পোশাক খাতের চলমান শ্রম অসন্তোষের ফলে দেশের পোশাকশিল্প রপ্তানি ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এ শিল্প নিয়ে চক্রান্ত চলছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পতিত সরকারে কিছু সুবিধাভোগী গোষ্ঠী ও বিদেশি রাষ্ট্র এ চক্রান্তে জড়িত।  উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার ফলে ক্রেতারা তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল ও পণ্যের ডিসকাউন্ট সুবিধা দাবি করছে।

চিঠিতে আরো বলা হয়, বেশ কিছু কারখানা এরই মধ্যে মজুরিসংকটে পড়েছে। এর মধ্যে ৩৯ কারখানায়  শ্রমিকরা কাজ  করেনি। শ্রম আইনের ১৩/১ ধারায় এসব কারখানা বন্ধ ছিল। এসব কারখানায় গত ২০ দিনে ৪৫৯ দিনের সমপরিমাণের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারখানাগুলোাত ৫৬ হাজার ৩৫১ জন শ্রমিক কাজ করেন। তাঁদের মজুরি দিতে হবে ৫৮ কোটি ৬১ লাখ ৮৪ হাজার ৬৪৭ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাগুলোর কয়েকজন মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আইন-শৃঙ্খলার দুর্বলতার সুযোগে কিছু উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিক কারখানায় কারখানায় শ্রম-অসন্তোষ তৈরি করছে।

শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেওয়ার পরও অভিনব কায়দায় কারখানায় অস্থিরতা তৈরি করছে। কোনো কোনো কারখানায় শ্রমিকরা কর্মকর্তাদের ঢুকতে দিচ্ছেন না। অনেক কারখানায় শ্রমিকরা কাজ না করে বসে থাকছেন এবং মজুরি দাবি করছেন।

এ আর জিনস প্রডিউসার লিমিটেডের মালিক মো. নাজমুল কবির কালের কণ্ঠকে বলেন, গত সেপ্টেম্বরে শ্রম আইনে ১৩/১ ধারায় (কাজ নেই, মজুরি নেই) ১২ দিন কারখানা বন্ধ ছিল। কিন্তু এখন শ্রমিকরা মজুরি দাবি করছেন। আমরা কখনো কারখানা শ্রমিকের মজুরি বকেয়া রাখিনি। আগামী বৃহস্পতিবার সেপ্টেম্বরের মজুরি পরিশোধ করা হবে।

তিনি আরো বলেন, সরকার কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে পোশাকশিল্প কঠিন সংকটে পড়বে।

ক্ষতিগ্রস্ত কারখানা অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, শ্রম অসন্তোষের ফলে ১৪ দিন কারখানা বন্ধ ছিল। এক দিন বন্ধ থাকলে পাঁচ লাখ ডলারের উৎপদান ব্যাহত হয়। অথচ শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এখন নতুন দাবি, কোনো কোনো কর্মকর্তাকে বাদ দিতে হবে। গতকাল কয়েকজন কর্মকর্তাকে তাঁরা কারখানায় ঢুকতে দেননি। এমন সব অভিনব দাবির মুখে হিমশিম খাচ্ছি। উৎপদন বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
সূত্র: কালেরকন্ঠ

সর্বশেষ