সরকার পরিবর্তনে পালটে গেল দৃশ্য ভৈরবে দেখা মিলছে না এমপিসহ আ.লীগের নেতাদের

এম আর ওয়াসিম ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সরকার পরিবর্তনে পালটে গেল দৃশ্য

দেখা মিলছে না সাবেক এমপিসহ আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের। উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতাসহ ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী ঘরবাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। আত্মগোপনে যাওয়া এসব নেতাদের মধ্যে,কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপন। তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা মার্কা নিয়ে টানা টানা ৪র্থ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।এছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো: সায়দুল্লাহ্ মিয়া সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু,পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এস.এম বাকী বিল্লাহ্ ও সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভসহ বেশ কয়েকজন দলীয় শীর্ষ পদধারী নেতারাও রয়েছেন। তাদের কারো এখন দেখা মিলছে না। আত্মগোপনে থাকায় ১৫ আগস্ট উপলক্ষে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি আওয়ামী লীগ। অন্য বছরের মতো উপজেলার কোথাও মাইকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাজাতেও শোনা যায়নি। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ কার্যালয়েও কোনো নেতা-কর্মীদের দেখা যায়নি।

গত (৫ আগস্ট ) সোমবার দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর থেকেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অভিভাবকশূন্য সংকটময় এ দিনগুলোতে বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তাদের কর্মী-সমর্থকরা। যদিও (৫ আগস্ট) এর পর এখন পর্যন্ত কোনো কর্মী-সমর্থকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেনি।

গত ৩৬ দিনের আন্দোলনে দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে গত ৫ আগস্ট দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ত্যাগের খবর প্রকাশ হওয়ার পর পরেই উপজেলাজুড়ে আনন্দ মিছিল বের করে হাজারো ছাত্র-জনতা। এর মধ্যেই উপজেলার বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাসভবন,

ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা,ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। ফলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি সঞ্চার হওয়ায় আত্মগোপনে চলে গেছেন তারা। এছাড়াও হামলা করা হয় ভৈরব থানায়,পৌর পাক, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স।

ভৈরবে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরুর দিকে বেশ দাপটে ছিল আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনগুলো। নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন নেতাকর্মীরা।(১৯ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পযন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দখল করে রাখে আন্দোলনকারীরা। পরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দা, বল্লম, লাঠিসোঠা, ইট পাটকেল ও পুলিশ,র‍্যাব সঙ্গে নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ চলাকালীন সময় বিএনপির অফিস ভাংচুর করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। গত রোববার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬ পযন্ত আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ, র‍্যাব আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ চলে। সর্বশেষ সোমবার (৫ আগস্ট) ১২ টা পর্যন্ত মাঠে ছিল আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগী সংগঠনের নেতাকমীরা। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টাও করেছিলেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় নিমিষের মধ্যেই তারা পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। পাল্টে যায় দৃশ্যপট। ক্ষমতা থেকে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের খবর পাওয়ার পরে নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। এই রিপোর্ট লেখা পযন্ত তাদের কাউকে দেখা যায়নি।

সর্বশেষ