নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার দেড়যুগ পূর্তি ও ১৯ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আজ ৯ মে। একটি বিশ্বমানের সাংস্কৃতিক চেতনাকে বুকে লালন করে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে যে বিশ্ববিদ্যালয়টি ত্রিশালের নামাপাড়া এলাকায় আজ থেকে দেড়যুগ আগে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল হাঁটি হাঁটি পা করে সে বিশ্ববিদ্যালয়টি এখন পূর্ণযৌবনা।

৯মে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের দিবসটি উপলক্ষ্যে সকাল ১০টায় জাতীয় সঙ্গীত সহযোগে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে দিবসটি শুরু হয়।

প্রথমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, এরপরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহামান ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে নবনির্মিত কলা ভবনে সামনে শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্তকরণ শেষে একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে গাহি সাম্যের গান মঞ্চে গিয়ে সমবেত হয়। পরে এই মঞ্চে বিশ্ববিদ্যালয় ১৯ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষ্যে  উপাচার্য ও আমন্ত্রিত অতিথিরা সহ ১৮ পাউ- ওজনের একটি কেক কাটেন। এরপরই শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের আলোচনা সভা।

আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন,প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেছেন, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় করবার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এখানকার একাডেমিক পরিবেশকে আমরা সুনিশ্চিত করতে চাই। একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় করবার যে অভিযাত্র সেই অভিযাত্রায় সবাই একত্রিত হয়েছি।

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে থাকার ইচ্ছের কথা পুনর্ব্যক্ত করে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের স্বপ্ন ছিল বিশ্ব ভারতীর মতো একটি প্রতিষ্ঠান এখানে গড়ে তোলা। আমি জানি মাত্র সাড়ে ৫৬ একর জায়গা দিয়ে বিশ্বভারতীর মতো প্রতিষ্ঠান হবে না। তাই আপনারা দ্বিতীয় যে ক্যাম্পাসের কথা চিন্তা করছেন এটির জন্য কাজ করেন। আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় যারা ছিলাম তারা এবারো একত্রে থাকবো।

এছাড়াও আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ, বৃহত্তর ময়মনসিং সাংস্কৃতিক ফোরামের মহাসচিব প্রকৌশলী রাশেদুল হাসান শেলী। আলোচনা করেন চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুশাররাত শবনম, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন ও প্রক্টর প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রিয়াদ হাসান, চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. তপন কুমার সরকার। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আল-মাহমুদ কায়েস ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রিয়েল সরকার সহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর অনুষ্ঠানে ধন্যবাদজ্ঞাপন ও সঞ্চালনা করেন।

উল্লেখ্য, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্রোহী কবির নামে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়। কবি নজরুল নামাপাড়া গ্রামের যে বট গাছের নিচে বাঁশি বাজাতেন, সেই বটতলার কাছেই ২০০৬ খ্রিস্টাব্দের ৯ মে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়টি উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অগ্রসরমান বিশে^র সাথে সংগতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং জাতীয় পর্যায়ে উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা, বিশেষ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আধুনিক জ্ঞানচর্চা ও পঠন-পাঠনের সুযোগ সৃষ্টি ও সম্প্রসারণের রূপকল্প নিয়ে কাজ করছে। চারটি বিভাগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি শুরু করা হলেও এখন বিভাগের সংখ্যা ২৪।

সর্বশেষ