‘জুলাই থেকে’ এলাকা ভেদে পানির দাম

‘জুলাই থেকে’ এলাকা ভেদে পানির দাম

এলাকা ভেদে পানির আলাদা দাম নির্ধারণ করতে চায় ঢাকা ওয়াসা। চলতি বছরের জুলাই মাস থেকেই এটি কার্যকর করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া এলাকাভিত্তিক দাম নির্ধারণের আগে নিয়মিত সমন্বয়ের অংশ হিসেবে বাড়তে পারে দামও।

সেবা সংস্থাভিত্তিক সাংবাদিকদের সংগঠন ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন-ডুরার সঙ্গে এক মতবিনিময়ে রোববার এসব কথা জানান ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান।

এলাকাভিত্তিক আলাদা দর নির্ধারণের জন্য সফটওয়্যার তৈরির কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “একটি এলাকার বাসিন্দাদের আয়ের ওপর নির্ভর করে ৬-৭টি ধাপে পানির দাম নির্ধারণ হবে।

যারা অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন তারা পানির দাম বেশি দিক। যারা কম ক্ষমতাসম্পন্ন তারা কম দিক। সরকার কোনোভাবে আর সাবসিডি দেবে না। কাজেই আমরা কোনো দাম বাড়াচ্ছি না, ওই সিস্টেমটা চালুর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি।

দাম সমন্বয়ের ক্ষেত্রে একেক এলাকার জন্য আলাদা দর নির্ধারণের চিন্তা কেন- তার জবাব দিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে একটা অংশ আছে যারা অনেক ধনী। বারিধারায় একটা দুই রুমের অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়া ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এখন চিন্তা করেন খিলগাঁওয়ে এ রকম একটা অ্যাপার্টমেন্ট নিয়ে যিনি থাকেন, তিনি ভাড়া দেন ২০ হাজার।

২০ হাজার টাকা যে ভাড়া দেয় আর এক লাখ ২৫ হাজার টাকা যে ভাড়া দেয় সে একই দামে পানি খাচ্ছে। সরকারের ভর্তুকির টাকা কেন আপনি বড়লোককে দেবেন। প্রশ্নই আসে না।”

পানি সরবরাহে সরকার আর ভর্তুকি দেবে না জানিয়ে তাকসিম বলেন, “উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে পানি বিক্রি করে ঢাকা ওয়াসাকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না।”

সরকার যদি কোনো সরকারি সংস্থাকে ভর্তুকি দিয়ে চালায়, তাহলে সেই সংস্থা কোনোদিন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না বলেও মনে করেন তিনি।

তাকসিম বলেন, আমাদের যদি ব্রেক ইভেনে আসতে হয় তাহলে দাম সমন্বয় করতে হবে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা ওয়াসা পানির দাম ৫ শতাংশ বাড়িয়েছিল। তখন থেকে আবাসিক গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতি হাজার লিটার পানির দাম নেওয়া হচ্ছে ১৫ টাকা ১৮ পয়সা। তবে উৎপাদন খরচ ২৫ টাকা।

অবশ্য বাণিজ্যিক গ্রাহকদের কাছে এক হাজার লিটার পানির জন্য ৪২ টাকা নিয়ে থাকে সংস্থাটি।

আবাসিকে উৎপাদন খরচের কম মূল্যে আর বাণিজ্যিকে খরচের বেশি দামে পানি বিক্রি করে মোট কত টাকা ভর্তুকি দিতে হয়, সেই তথ্য অবশ্য প্রকাশ করেননি ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

তাসকিম দাবি করেন, কিছু গণমাধ্যম ওয়াসাকে ঢালাও দোষারোপ করে।

তিনি বলেন, কেন জানি তারা আমাদের দোষগুলো খুঁজে বেড়ায়, আমাদের ভিকটিমাইজ করে। একবার আমরা উচ্চপর্যায়ে (সরকারের) বিষয়টি জানতে চেয়েছিলাম যে রাজনৈতিকভাবে আমরা ভিকটিম হলাম কি না। তখন আমাদের বলা হল ‘হ্যাঁ, তোমরা রাজনৈতিকভাবেই ভিকটিম হয়েছ’।

“অর্থাৎ এটা আমাদের বিষয় না, সরকারকে অপদস্থ করা। সরকারকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য একটা সেকশন অব পিপল আছে, তার মধ্যে মিডিয়াও একটা।”

ঢাকা ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, মো. আকতারুজ্জামান, মো. মিজানুর রহমান ও উত্তম কুমার রায়, ডুরার সভাপতি ওবায়দুর মাসুম, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক আবীর হাকিম, অর্থ সম্পাদক নিলয় মামুনসহ সদস্যরা মতবিনিময়ে বক্তব্য রাখেন।

সর্বশেষ