মোহাম্মদপুরে সিকিউরিটি গার্ডের হাতে সহকর্মী খুন,অভিযুক্ত গার্ড গ্রেফতার

মোহাম্মদপুরে সিকিউরিটি গার্ডের হাতে সহকর্মী খুন,অভিযুক্ত গার্ড গ্রেফতার

হাসানুজ্জামান সুমন, বিশেষ-প্রতিনিধি:

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক,পিপিএম।
মোহাম্মদপুরে সিকিউরিটি গার্ডের হাতে আরেক সহকর্মী খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত গার্ডকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত গার্ডের নাম আক্তার হোসেন। বুধবার রাতে ঢাকার নাজিরাবাজার এলাকার একটি কারখানা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়েছে।
উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ জানতে পারে, মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় অবস্থিত বেসরকারী এনজিও ‘সিদীপ’ এর পাওয়ার সাব-স্টেশন রুমের ভেতর একজন সিকিউরিটি গার্ডের মৃতদেহ পরে আছে। সংবাদ পেয়ে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশ মৃতদেহের সুরতহালের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। ভিকটিমের মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা রুজু হয়।
তিনি আরও বলেন, এরপর থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ভবনে স্থাপিত সিসিক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে গ্রেফতারকৃত আক্তার হোসেন চেয়ারে কম্বল মুড়িয়ে শুয়ে থাকা জুয়েল মিয়াকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। এতে জুয়েল মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপরও আক্তার তাকে নৃশংসভাবে আঘাত করতে থাকে। লাঠির আঘাতে জুয়েলের মাথা, চোখ, মুখমন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর যখম হয়। গুরুতর আঘাতের ফলে জুয়েলের মৃত্যু হলে আক্তার হোসেন লাশ গোপন করার জন্য হাত বেঁধে কম্বল মুড়িয়ে পাওয়ার সাব-স্টেশন রুমের ভিতর নিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আক্তার ভিকটিম জুয়েলকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
গ্রেফতারকৃত আক্তার দেড় বছর ধরে সিদীপ এনজিওতে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করছে। জুয়েল ১ জানুয়ারি সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে যোগদান করে। জুয়েল মিয়া অফিসের বাইরে যেতে চাইলে প্রায় সময়ই আক্তার বাধা দিত। এতে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। আক্তার হোসেন আগে থেকে এই প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করার সুবাদে অন্যদের উপর নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করত। জুয়েল মিয়া তা মেনে নিতে পারেনি। এছাড়াও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আক্তার তার এক বান্ধবীকে রাতে অফিসে নিয়ে আসে এবং জুয়েল তাদেরকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে। আক্তার এটি কর্তৃপক্ষকে বলে দেয়ার হুমকি দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ঘটনার দিন আক্তার লোহার পাইপ দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে জয়েলকে হত্যা করে।
মোহাম্মদপুর থানার মামলায় গ্রেফতারকৃত জুয়েলকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

সর্বশেষ