PES 2013 Download for Windows 7/8/10/11 - PES2013

Download PES 2013 for Windows 7/8/10/11 and dive into the exciting world of soccer with PES2013. Experience realistic gameplay and enhanced football simulation.
Get it now for FREE !

Pes 2013 Download
তিন বছর ধরে পণ্যের দাম নির্ধারণ নিয়ে ধোঁকাবাজি বাজার অব্যবস্থাপনার চরম অরাজকতা

 

 

মিরপুরের গৃহিণী তাসনুভা সকালে মহল্লার বাজার থেকে এক কেজি বেগুন, আধাকেজি করলা ও আধা কেজি ঢ্যাঁড়শ কিনে বাসায় ফিরছেন। তিনি ৬০ টাকা কেজি দরে বেগুন, ৮০ টাকা কেজি দরে করলা এবং ৬০ টাকা কেজি দরে ঢ্যাঁড়শ কিনেছেন। সব মিলিয়ে ২ কেজি সবজি কিনতে তার ব্যয় হয়েছে ১৩০ টাকা। অথচ এই পণ্যগুলোর উৎপাদন খরচ এর তুলনায় প্রায় পাঁচ গুণ কম।

কৃষি বিপণন অধিদফতর প্রতিদিনের বাজার পরিদর্শন করে কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ, যৌক্তিক মূল্য ও খুচরা মূল্য সম্পর্কে কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠায়। গতকাল তারা মন্ত্রণালয়ে যে প্রতিবেদনটি পাঠিয়েছে, তা পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে- প্রতিটি সবজি উৎপাদন খরচের চেয়ে প্রায় পাঁচ গুণ বা তার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

পাঁচ গুণের বেশি দাম সবজির

কৃষি বিপণন অধিদফতরের প্রতিবেদন থেকে ৬টি সবজির উৎপাদন খরচ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এ বছর বাজারে আসা প্রতি কেজি বেগুনের উৎপাদন ব্যয় ১০.২৬ টাকা, করলা ৯.৬০ টাকা, পটল ৯.৬৯ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ১২.৪০ টাকা চিচিংগা ১১.৪৭ টাকা এবং প্রতিটি লাউয়ের উৎপাদন ব্যয় পড়েছে ১৩.২০ টাকা। অথচ এসব পণ্য প্রত্যেকটির কেজিপ্রতি খুচরা মূল্য ন্যূনতম ৫০ থেকে ৮০ টাকা।

দেখা যাচ্ছে, বেশির ভাগ সবজির উৎপাদন ব্যয় ১০ থেকে ১২ টাকা হলেও এগুলো ভোক্তার হাতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় ৫ গুণ দাম বেড়ে যাচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে- এই অতি মুনাফা যাচ্ছে কার পকেটে?

কৃষিপণ্যের সরবরাহ, বিপণন ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান কৃষি বিপণন অধিদফতরের হলেও এই প্রতিষ্ঠানটি বাজার মনিটরিংয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারছে না বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অসাধু তৎপরতা বন্ধে মনিটরিংয়ের ক্ষমতা দেওয়া হলেও কোনো ধরনের জরিমানা বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়া হয়নি প্রতিষ্ঠানটিকে। ফলে কৃষিপণ্যের বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির সহকারী পরিচালক (বাজার সংযোগ-১) প্রণব কুমার সাহা জানান, বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে এবার সবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে করে বেশির ভাগ সবজি উৎপাদন খরচের তুলনায় বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। পণ্যের দামে অতি মুনাফা ঠেকাতে তারা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বাজার মনিটরিং করছেন। এ ছাড়া কৃষকের হাত থেকে ভোক্তার হাতে পৌঁছাতে কোনো পর্যায়ে কৃষিপণ্যের দাম বাড়ছে- মহাপরিচালকের নির্দেশে অধিদফতর সে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলেও জানান তিনি।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, কৃষি পণ্যের বিপণন ব্যবস্থায় ত্রুটি রয়েছে। সেখানে হাত না দিলে সবজির দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। তিনি বলেন, একটি সবজি কৃষকের কাছ থেকে ফড়িয়া, আড়তদার, পাইকার এবং খুচরা বিক্রেতা-এই চারটি ধাপ অতিক্রম করে ভোক্তার হাতে পৌঁছায়। প্রতিটি ধাপে ১০ টাকা করে মুনাফা যোগ হলেও ১০ টাকার পণ্যের দাম ৫০ টাকা হয়ে যায়। কৃষকের পণ্য বিপণন প্রক্রিয়া থেকে এই মধ্যস্বত্বভোগীদের না তাড়াতে পারলে ভোক্তাকে বেশি দামেই সবজি কিনে খেতে হবে। এ জন্য স্থানীয় পর্যায় থেকে জেলা ও বিভাগীয় শহরের প্রতিটি স্তরে সমবায়ভিত্তিক কৃষি বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার- যাতে কৃষক বা উৎপাদকের কাছ থেকে ভোক্তা সরাসরি পণ্য কিনতে পারে।

সর্বশেষ