ইঞ্জিনিয়ার হত্যাকারী সেই রফিক ৬টি গাড়ি ও ৫টি মোটরসাইকেলসহ গ্রেফতার

ইঞ্জিনিয়ার হত্যাকারী সেই রফিক ৬টি গাড়ি ও ৫টি মোটরসাইকেলসহ গ্রেফতার

হাসানুজ্জামান সুমন,বিশেষ-প্রতিনিধি: ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারকে হত্যাকারী সেই রফিক ৬টি গাড়ি ও ৫টি মোটরসাইকেলসহ গ্রেফতার। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম গত ৬ তারিখে তুরাগ থানাধীন বেড়িবাধ এলাকায় অভিযান চালিয়ে রফিকুল ইসলাম নামক একজন কুখ্যাত গাড়ি চোরকে গ্রেফতার করে তার দেখানো মতে একটি মাইক্রোবাস, পাঁচটি গাড়ি এবং পাঁচটি মোটরসাইকেল ও হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আলামত ছিনতাই হওয়া একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে। উদ্ধার করা সকল গাড়ি ও মোটরসাইকেল বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার থানা এলাকা থেকে চুরি করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত একাধিক মামলা এবং জিডি আছে। গত ১০.২.২৩ তারিখে ০৯টি মোটরসাইকেলসহ রফিকুল ইসলামের অন্যতম সহযোগী রানা শেখকে গ্রেফতার করেছিল ডিবি লালবাগ বিভাগ। এ রানা শেখ বিজ্ঞ আদালত এবং ডিবি পুলিশকে তখন জানিয়েছিল কিভাবে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিনকে হত্যা করে তার মোটরসাইকেল এবং মোবাইলকে ছিনিয়ে নিয়েছিল রফিকুল ইসলাম। ২৮.১১.২০২১ খ্রিঃ তারিখে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও ইলেকট্রিশিয়ান জনাব গিয়াস উদ্দিন তার মিরপুরের বাসা থেকে নিজের কালো রঙের বাজাজ ডিসকভার মোটরসাইকেল যোগে অফিসে যান।

পরবর্তীতে অফিস থেকে বিকাল ৩:০০ টার দিকে বের হয়ে আর বাসায় ফিরেন নি। রাত্র ১১:০০ টায় উত্তরা পূর্ব থানাধীন ০৬ নম্বর সেক্টরস্হ নষ্ট্রাম হাসপাতাল থেকে একটি মোবাইল কলে ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিনের সন্তানরা জানতে পারেন অচেতন অবস্থা গিয়াস উদ্দিনকে সেখানে রেখে গেছে কতিপয় পথচারী। গিয়াস উদ্দিন সাহেবকে পরবর্তীতে ক্রিসেন্ট হসপিটাল এবং সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা অবস্থায় ৮.১২.২০২১ খ্রিঃ রাতে মৃত্যুবরণ করেন। গিয়াস উদ্দিন সাহেব পথে অজ্ঞান অবস্থায় পরে থাকাকালে তার মোটরসাইকেল বা মোবাইলসেট কোনটি ই পাওয়া যায়নি। Stomach Wash Report ও ডাক্তারদের মতে তার মৃত্যুর কারণ ছিল Unknown Street Poisoning. ডিবি লালবাগ বিভাগ গত ১০.০২.২০২৩ খ্রিঃ তারিখে চকবাজার থানাধীন একটি চুরির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে মোটরসাইকেল চোর চক্রের সদস্য আসামি মোঃ রানা শেখকে গ্রেফতার করে তার হেফাজত থেকে মোট ০৯টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। উদ্ধার করা মোটরসাইকেলগুলোর মধ্যে একটি মোটরসাইকেল ছিল গিয়াস উদ্দিন সাহেবকে পয়জনিং করে হত্যা করে ছিনিয়ে নেয়া মোটরসাইকেলটি। বিজ্ঞ আদালতে রানা শেখ দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছিল পাঠাও চালককে উত্তরার নিয়ে যাওয়ার পথে দুইজনে মিলে চা খাওয়া কালে চায়ের মধ্যে গুড়া করা সাতটি ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে দেয়ার কারণে মোটরসাইকেল চালক গিয়াস উদ্দিন ধীরে ধীরে ইমব্যালেন্সড ও অচেতন হয়ে পরে। সেই ফাঁকে মোটরসাইকেল ছিনতাইকারি মোঃ রফিকুল ইসলাম ভিকটিমের মোবাইলফোন, কিছু নগদ টাকা এবং মোটরসাইকেলটি নিয়ে পালিয়ে যায়।

চোরাই এই মোটরসাইকেলসহ আরো কয়েকটি মোটরসাইকেল বিক্রয়ের জন্য দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গের মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও নড়াইল এলাকায় নিয়ে বিক্রয় করে দেয়। কুখ্যাত সিএনজি চোর মুসলিমের শিষ্য রফিকুল ইসলাম ডাবের পানি, শরবত, চা ও টাইগার নামক পানীয়ের মধ্যে বহু সংখ্যক ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে সেগুলো খাইয়ে সিএনজি ড্রাইভারকে অচেতন করে সিএনজি চুরি করার মধ্য দিয়ে অপরাধ জগতে প্রবেশ করে। বর্তমানে রফিকের নামে ইতোমধ্যে মোটরসাইকেল ও গাড়ি চুরির ৪২ টি মামলার সন্ধান পাওয়া গেছে। বিভিন্ন পর্যায়ের আদালত থেকে মুক্তি পেয়ে সে সংশোধিত হয়নি বরং ভিন্ন কৌশলে এবং বিশেষ ধরনের Master Key ব্যবহার করে চোখের নিমিষে চুরি করে নিয়ে যায় মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস। ইতোমধ্যে সে তিন দিনের পুলিশ রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে গাড়ি চুরি সংক্রান্ত মূল্যবান বহু তথ্য প্রদান করেছে।

সর্বশেষ