বাংলাদেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, এমএলএম ব্যবসা পরিচালনা এবং ক্রিপ্টো কারেন্সিতে লেনদেন অবৈধ ও নিষিদ্ধ।এর পরও কমপক্ষে ৫০০ ডলার বিনিয়োগ করলে দিনশেষে পাঁচ হাজার টাকা লাভ হবে—এমন কল্পিত মুনাফার লোভে শত শত মানুষ বিনিয়োগ করেন এই কম্পানিতে। অনেকে গয়না ও মূল্যবান সামগ্রী বন্ধক রেখেও বিনিয়োগ করেছিলেন।
জয়পুরহাট : জয়পুরহাটে ১১ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় এক হাজার যুবককে প্রতিদিন মোটা অঙ্কের লভ্যাংশে প্রলুব্ধ করে তাঁদের কাছ থেকে এই টাকা হাতিয়ে নিয়ে জেলার সাতজন সিইও সাইট বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁরা হলেন সাদ আলম চৌধুরী, তামান্না আক্তার সুরভি, সুমন খন্দকার, মইনুল হোসেন, মোশারফ হোসেন, আল হোসেন রাব্বি ও শহিদুল আলম চৌধুরী। জেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকার প্রতারিতদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের এক ব্যক্তি পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জানান, যাঁরা অ্যাপভিত্তিক এমএলএম ব্যবসায় যুক্ত তাঁদের অনেকেই চক্রটি সম্পর্কে জানেন। প্রতারণার স্বীকারও হয়েছেন অনেকে। দুই দিন থেকে অ্যাপটি বন্ধ রয়েছে। অনেকেই এখন মুখ বন্ধ রেখেছেন। মোবাইল সারানোর এই কারিগর বহুদিন ধরে বিভিন্ন রকম এলএমএল ব্যবসায় যুক্ত। তবে তিনি নিজে অ্যাপের কারবারে জড়িত নন বলে দাবি করেন।
রাজশাহী : এমটিএফইয়ের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন রাজশাহীর হাজারো মানুষ। যাদের মধ্যে বেশির ভাগই বেকার। তাঁরা চাকরি না পেয়ে ধার-দেনা করে, কেউবা জমি বন্ধক রেখে ওই অ্যাপে টাকা লগ্নি করেন।
রাজশাহী নগরীসহ জেলার ৯টি উপজেলার অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ এই অ্যাপের মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছেন বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। আর এই বিপুল মানুষের কাছ থেকে ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকচক্রটি। রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা সেলিম উদ্দিন জানান, কিছুদিন আগে তিনি ধার করে ৬০ হাজার টাকা জমা দিয়েছিলেন এমটিএফইতে। দুই-তিন দিন তিনি টাকাও উত্তোলন করেছেন। সব মিলিয়ে তিনি ১০ হাজার টাকার মতো উত্তোলন করতে পেরেছিলেন।
কুমিল্লা : কুমিল্লা থেকেই চক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে অর্ধশত কোটি টাকার বেশি। জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতারণার শিকার হয়েছেন মুরাদনগর উপজেলার যুবকরা। ওই অ্যাপে বিনিয়োগ করতে স্থানীয় টিম লিডার হিসেবে কুমিল্লা নগরীসহ বিভিন্ন স্থানে যুবকদের যাঁরা উদ্বুদ্ধ করেছেন, তাঁদের প্রায় সবাই মুরাদনগর উপজেলার বাসিন্দা।
কুমিল্লা নগরীর চর্থা এলাকার বাসিন্দা মনির আহমেদ জানান, রাতারাতি ধনী হতে গিয়ে প্রতারিত হয়েছেন যুবকরা। মূলত এমটিএফই নামের অ্যাপটিতে কাজ করত সংঘবদ্ধ একটি চক্র। এই চক্রটি গ্রাহকদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে নানা তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে অ্যাপটি পরিচালনা করত।
(প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুমিল্লা ও জয়পুরহাট প্রতিনিধি)
সূত্র: কালেরকন্ঠ