ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করলে বাংলাদেশ এগোতে পারবে না: কাদের

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করলে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগোতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বুধবার (২৪ মে) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক ভবনে বারৈয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কাজের উদ্বোধন শেষে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু সমাধান আছে, তবে তা বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্য ওপেন আছে। কিন্তু মুখ দেখাদেখি বন্ধ করলে এবং সম্পর্ক নষ্ট করলে, আমরা সামনের দিকে এগোতে পারব না। আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য পিছিয়ে থাকবে।’

উন্নয়নের জন্য ভারত বিনিয়োগ করলে বাংলাদেশ আর কারও কাছে যাবে না বলে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, লাইন অফ ক্রেডিটের (এলওসি) মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশে বেশ কিছু বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে এসেছে। ভারত যদি বাংলাদেশে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করে, তাহলে আমাদের অন্য কারও কাছে যেতে হয় না।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমাদের যে রোড কানেক্টিভিটি ও রেল এই দুই বিষয়ে ভারতের সঙ্গে কানেক্টিভিটি অনেক এগিয়ে গেছে। এই ট্রানজিট সুবিধার জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যে উভয়ই লাভবান হচ্ছি। আমি ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই, আমাদের দেশের স্বার্থে উন্নয়নের স্বার্থে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি ২০-তে যোগ দিতে আবারও সম্ভবত সেপ্টেম্বরে ভারতে যাবেন। এর মধ্যে আমাদের পার্টি টু পার্টি একটা কনটাক্ট, সেটিও ভারতে বিজিপি আমন্ত্রণ করেছে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলকে। আমরা আশা করছি, জুলাই মাসে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল (ভারতে) যাবে।

তিনি বলেন, একাত্তরে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রচিত হয়েছিল, তা পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর অবিশ্বাস আর সন্দেহে রূপ নেয়। কিন্তু ওই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক যদি অব্যাহত রাখতে পারতাম, আমরা লাভবান হতাম। কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় সেটি হয়নি। হয়নি বলে আমাদের এই অবিশ্বাস ও সন্দেহ একটি দেয়াল তৈরি করেছিল। এটি ভাঙা দরকার ছিল। সেটিই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের নরেন্দ্র মোদি ভেঙেছেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মাঝে যে ব্যবধান ছিল আমরা অনেক সমাধান করতে পেরেছি। যদি আমাদের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক, পারস্পরিক সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে আলাপ-আলোচনা করে সবকিছু সমাধান সম্ভব, আমরা যেখানে সীমান্ত সমস্যা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় যে সন্ত্রাসবাদ চলত, সেটি বন্ধ হয়েছে। এখান থেকে তা করার কোনো সুযোগ নেই। একইভাবে ভারতও কোনো সুযোগ দিচ্ছে না। তারাও এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স। এজন্য সীমান্তে বর্ডার সন্ত্রাসবাদ যেটি দু’দেশের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে আসত, সেটি আর হচ্ছে না।

সেতুমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিআরটিসির বহরের বেশিরভাগ গাড়ি ভারতের প্রস্তুত করা। এখন আমাদের বিআরটিসির বহরে ১১শর মতো গাড়ি এসেছে। নতুন করে সবার জন্য বৈদ্যুতিক ডাবলডেকার ১০০ এসি বাস নভেম্বরের মধ্যে আনার কথাবার্তা হয়েছে। আশা করি, বিআরটিসির বহর আরও সমৃদ্ধ হবে।’

সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মো. ইসহাকের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক, ঢাকা বিআরটি কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

সর্বশেষ