ইবি প্রতিনিধি-
সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বিভিন্ন একাডেমিক ভবনে নতুন চেয়ার-টেবিল দেওয়া হয়েছে। তবে কিছুদিন যেতে না যেতেই ফাটল দেখা দিয়েছে কোটি টাকা ব্যয়ে আনা এসব ফার্নিচার গুলোতে। অতিরিক্ত তাপের কারণে চেয়ার-টেবিল গুলো ফেটে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশল অফিস।
এদিকে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ফাটল ধরা পণ্যগুলো তড়িঘড়ি করে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বুধবার (২৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবনের চতুর্থ তলা থেকে ফাটল ধরা চেয়ার টেবিল গুলো সরিয়ে নিতে দেখা যায়।
তবে ফাটল ধরা চেয়ার-টেবিল গুলো তড়িঘড়ি করে পরিবর্তনের কাজ শুরু হলেও বাকি চেয়ার-টেবিলগুলো এখনো সরানো হয়নি। এতে বাকি পণ্যগুলোও দ্রুততম সময়ের ভিতরে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা তৈরী হয়েছে।
প্রকৌশল অফিস সূত্রে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন বিভাগের জন্য ৬০০০ হাজার চেয়ার ও ২০০০ টেবিলের অর্ডার করা হয়। যেখানে মোট বাজেট ধরা হয় ৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এই কাজের অনুমোদন পায় আখতার গ্রুপ। চেয়ার-টেবিল গুলো ভবনে রাখার মাস না পেরুতেই ফাটল দেখা দেয়। এছাড়া অল্প ঘর্ষণেই রং উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিভিন্ন বিভাগের শ্রেণীকক্ষ ও চেয়ার টেবিল সংকট ছিলো। নতুন চেয়ার টেবিল পেয়ে মনের মাঝে এক প্রকার প্রশান্তি অনুভব করছিলাম। তবে কিছুদিন যেতে না যেতে দেখছি চেয়ার টেবিল গুলোতে ফাটল দেখা দিচ্ছে ও রং উঠে যাচ্ছে। যা দেখে আমাদের কষ্টের উদ্রেক হয়,
এগুলো মেনে নেওয়ার বিষয় নয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে জোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে আখতার ফার্নিচার গ্রুপের কুষ্টিয়া শাখায় দায়িত্বরত কর্মকর্তা রেজা বলেন, নতুন ভবনে আনা ফার্নিচার গুলো ৩৫° থেকে ৪০° সিজন করা ছিলো। সিজনটি বৈশ্বিক আবহাওয়ার কারণে অটোমেটিকলি ৪০° এর উপরে পরার কারণে কিছু সংখ্যক প্রোডাক্টে ত্রুটি দেখা দিয়েছে।
এদিকে এগুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে মানসম্মত চেয়ার-টেবিল হলেও অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে এমন হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রকৌশল অফিস। ফলে ত্রুটিপূর্ণ পণ্যগুলো দ্রুত সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আখতার গ্রুপের কুষ্টিয়া-পাবনা অঞ্চলের দায়িত্বরত আজাদ বলেন, প্রকৌশল অফিস থেকে ত্রুটিযুক্ত পণ্য গুলো দ্রুত পরিবর্তন করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যেগুলোতে ত্রুটি দেখা দিয়েছে সেগুলা লিখিত আকারে বুঝিয়ে কোম্পানির কাছে পাঠানো হবে। কিছুদিনের মধ্যেই পণ্যগুলো চেঞ্জ করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী শহিদ উদ্দীন মো. তারেক জানান, এই ফার্নিচারগুলো সবচেয়ে মানসম্মত৷ ইতোপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ফার্নিচার নেওয়া হয়নি। তবে অতিরিক্ত গরমের কারণে অনাকাঙ্খিতভাবে কিছু প্রোডাক্টে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। আমরা আখতার ফার্নিচার গ্রুপকে বিষয়টি জানিয়েছি। যেগুলা নষ্ট হয়েছে সেগুলা দ্রুত পরিবর্তন করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পণ্যের গুণগত মান পরীক্ষা করে নেওয়া হবে। খুব দ্রুতই গুণগত মান পরীক্ষা করে পণ্যগুলো বুঝে নেওয়ার জন্য একটা কমিটি তৈরী করে দেওয়া হবে।