ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলার আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তাঁদের এলাকায় আগের তুলনায় গত দুই দিনে লোডশেডিং অনেক বেড়েছে। সেখানে এখন আট থেকে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ পাচ্ছে না মানুষ। কোথাও কোথাও ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ না পাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকায় রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারছে না। এসএসসি শিক্ষার্থীরা বসতে পারছে না পড়ার টেবিলে। ভালোভাবে পড়ালেখা করতে না পারায় চিন্তিত শিক্ষার্থীরা।
জানতে চাইলে ঢাকা পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বিকাশ দেওয়ান গতকাল রাতে বলেন, ‘এখন চাহিদা বাড়লেও আমাদের বিতরণ এলাকায় কোনো লোডশেডিং নেই। আজ (গতকাল) আমাদের চাহিদা ছিল এক হাজার ৭৭০ মেগাওয়াট। চাহিদার পুরোটাই আমরা সরবরাহ করতে পেরেছি। তাই কোনো লোডশেডিং করতে হয়নি। তবে বিভিন্ন এলাকায় কারিগরি ত্রুটির কারণে স্বল্প সময়ের জন্য বিদ্যুিবভ্রাট হতে পারে।’
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষক সাইফুল আলম তুহিন গতকাল বলেন, ‘দুই দিন ধরে ত্রিশাল উপজেলার গ্রাহকরা দিনের বেশির ভাগ সময়ই বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে রাতে ঠিকমতো ঘুমানোও যাচ্ছে না। এসএসসি পরীক্ষার্থীরা ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছে না। এর প্রভাব পড়তে পারে তাদের পরীক্ষার খাতায়।’
তিনি বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি লো ভোল্টেজ সমস্যায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গ্রাহকদের। লো ভোল্টেজ থাকায় বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত সাবমারসিবলগুলোতে ঠিকমতো পানি উঠাতে পারছে না। এদিকে প্রয়োজনীয় পানি তুলতে ভোল্টেজ বৃদ্ধির আশায় গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে ভুক্তভোগীদের।’
সিলেটের মৌলভীবাজারের গ্রাহক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের মধ্যে আমাদের এলাকায় লোডশেডিং কম থাকলেও কয়েক দিন ধরে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। একবার গেলে আর বিদ্যুৎ আসার খবর থাকে না। এলেও আধাঘণ্টার বেশি থাকে না। এতে গরমে বাচ্চাদের নিয়ে রাতে ঘুমাতে পারি না। দিনের বেলায় বেশি লোডশেডিং হয়।’
আরইবির বিতরণ এলাকায় লোডশেডিং : গতকাল দিনের বেলা আরইবির ৮০টি সমিতির মধ্যে ৪৬টি সমিতিতে চাহিদার তুলনায় এক হাজার ২১৬ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল। তাদের মধ্যে আরইবির কয়েকটি সমিতির লোডশেডিং চিত্র তুলে ধরা হলো-

জানতে চাইলে বিপিডিবির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না শর্তে বলেন, আবার তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় বিদ্যুৎ চাহিদা ও উৎপাদনে কিছুটা ঘাটতি হচ্ছে। মূলত দক্ষিণাঞ্চলের রামপাল ও বরগুনার বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে নেই। এ দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতা প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট। এর মধ্যে রামপালের ৬৬০ মেগাওয়াট (প্রথম ইউনিট) ও বরগুনার ৩০৭ মেগাওয়াট। এসব অঞ্চলে আরইবির অন্তত ২০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে চাহিদা অনুযায়ী এসব সমিতি কিছুটা বিদ্যুৎ সরবরাহ কম পাচ্ছে। এতে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের গ্রাহকদের মধ্যে লোডশেডিং করে সমন্বয় করতে হচ্ছে।