মেহেদী হাসান শাহীন, স্টাফ রিপোর্টার:
ঋতুরাজ বসন্তেরও বিদায়ের দিন। বাংলা বছরের শেষ দিন হওয়ায় চৈত্র মাসের শেষ দিনটিকে বলা হয় চৈত্র সংক্রান্তি।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লোকোৎসব চড়ক পূজা। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী চৈত্রের শেষ দিনে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। চৈত্র মাসের শেষ ও বৈশাখের প্রথম এক-দুই দিনব্যাপী এর উৎসব চলে।
চৈত্র সংক্রান্তি কড্ডা সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের উপলক্ষে গাজীপুর মহানগরের তুরাগ নদীর তীরে কড্ডা নামা বাজারে অনুষ্ঠিত হলো চড়ক উৎসব।
বাংলা ক্যালেন্ডার অনুসারে শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) ৩০ চৈত্র ১৪২৮ বাংলা। এদিনকে চৈত্র সংক্রান্তি হিসেবে পালন করে থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। বছরের শেষ দিনে চড়ক পূজার আয়োজন করা হয়।
প্রতি বছরের মতো এবছরও কড্ডা সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের উদ্যোগে গাজীপুর মহানগরের তুরাগ নদীর তীরে কড্ডা নামা বাজার এলাকায় শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চড়ক পূজার আয়োজন করা হয়েছে।
এ পূজা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কড্ডা বাজার শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দিরের সাধারন সম্পাদক ডাঃ গোপাল চন্দ দাস, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি আব্দুল হালিম সরকার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাসন মেট্রোথানা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফাইজুল আলম দিলিপ, মহানগরের ১৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম মোল্লা, সিটি কর্পোরেশনের ১৩, ১৪ ও ১৫ নং সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর লিপি চৌধুরী মনি, সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী হাজ্বী মোঃ আরিফ হোসেন ও বাবু প্রবীর কুমার ঘোষ, ইন্সপেক্টর বাংলাদেশ সিআইডি, ঢাকা প্রমুখ।
চড়ক পূজা মূলত শিব ঠাকুরের পূজা, একে শিবের গাজনও বলা হয়ে থাকে। এ পূজায় অংশগ্রহণকারীরা চৈত্র মাস বাড়ির বাইরে শিব মন্দিরে অবস্থান করেন। এ সময় তারা লাল কাপড় পরে সন্ন্যাসীর মতো বিশেষ ভাবে জীবনযাপন করেন। তাদের ভক্ত বলা হয়ে থাকে। তারা শিব এবং গৌরী সাজিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গাজনের গান গায়। মানুষ চাল-সবজি অথবা আর্থিকভাবে যতোটুকু সহায়তা দিয়ে থাকেন তা দিয়ে ভক্তরা নিজেদের খাবার খান এবং বাকিটা সঞ্চয় করে রাখেন। এই সহায়তা দিয়ে বছরের শেষ দিন অথবা পরে চড়ক পূজার আয়োজন করা হয়।
চড়ক পূজার বিশেষত্ব হলো খালি পায়ে ভক্তরা আগুনের মধ্য দিয়ে হাঁটা-চলা করেন, পিঠে বিশাল আকারের বরশি গেথে চড়ক গাছে ঝুলে থাকেন। এসব দেখতে প্রচুর সংখ্যক লোক ভিড় জমান। এবছরও গাজীপুর মহানগরের তুরাগ নদীর তীরে কড্ডা নামা বাজার বালুর মাঠে এই পূজার আয়োজন করা হয়।
কড্ডা মাঝিপাড়া এলাকার বাসিন্দা আনন্দ বর্মন জানান, পূর্ব পুরুষের রীতি অনুযায়ী প্রায় ৫৮-৬০ বছর ধরে কড্ডা নামা বাজার এলাকায় কড্ডা সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের উদ্যোগে চড়ক পূজার আয়োজন করা হয়। এতে আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫-৭ হাজার মানুষ সমাবেত হয়।