রাজধানীর কুনিপাড়ায় বস্তিতে পুড়ল ৫০ ঘর

রাস্তায় যানজট ছিল। বস্তিতে ঢোকার রাস্তাও খুবই সরু। বাড়িগুলো কাঠ, বাঁশ ও টিন দিয়ে তৈরি হওয়ায় দ্রুত আগুন ছড়ায়। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি নিয়ে ভেতরে ঢুকতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। এ ছাড়া পানির উৎসও পাওয়া যাচ্ছিল না।

—তাজুল ইসলাম, ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স)

ঘটনাস্থলে গিয়ে কথা হয় জিয়াউর রহমান ও ঝরনা আক্তার দম্পতির সঙ্গে। তাঁরা জানান, ঘটনার সময় তাঁরা ঘরে ছিলেন। হঠাৎ আগুন, আগুন চিৎকারে তাঁরা ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। দেখেন, পাশের বাড়িতেই আগুন লেগেছে। আগুন দ্রুত তাঁদের ঘরের দিকে আসছে। ঘরে টেলিভিশন, ফ্রিজ, বৈদ্যুতিক পাখা, খাট ও আলমারি ছিল। কোনো কিছুই নিয়ে বের হতে পারেননি।

জিয়াউর রহমান বলেন, তিনি নির্মাণশ্রমিক। ঝরনা পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তাঁদের সন্তান নেই। বিয়ের পর থেকে তাঁরা এই বস্তিতে থাকেন। ভাড়া দেন তিন হাজার টাকা। আট বছর ধরে ঘরে যেসব সম্পদ গড়েছিলেন, সবই শেষ হয়ে গেল আগুনে। পরনের কাপড় ছাড়া এখন আর কিছুই নেই।

জিয়াউর রহমানের পাশের বাড়িতেই তিন হাজার টাকা ভাড়ায় একটি ঘরে থাকতেন শফিকুল ইসলাম। সংসারে রয়েছে স্ত্রী, তিন সন্তান ও মা। তিনিও নির্মাণশ্রমিক। শফিকুল বললেন, ঘটনার সময় তিনি ঘরে ছিলেন না। তবে পরিবারের অন্য সদস্যরা ছিলেন। তাঁরা শুধু প্রাণটা বাঁচাতে পেরেছেন। ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারেননি।

প্রাথমিক হিসাবে ১১টি বাড়ি পুড়েছে জানিয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এসব বাড়িতে ৫০টি ঘর ছিল। আর বস্তিতে প্রায় ৫০০ ঘর আছে। বাড়িগুলোর নিচতলায় দোকান ছিল। আগুনের উৎস লাইনের গ্যাস বা বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে হতে পারে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁরা নিশ্চিত হতে পারেননি।

আগুন নেভাতে দেরি হওয়ার কারণ সম্পর্কে তাজুল ইসলাম বলেন, রাস্তায় যানজট ছিল। বস্তিতে ঢোকার রাস্তাও খুব সরু। বাড়িগুলো কাঠ, বাঁশ ও টিন দিয়ে তৈরি হওয়ায় দ্রুত আগুন ছড়ায়। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি নিয়ে ভেতরে ঢুকতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। এ ছাড়া পানির উৎসও পাওয়া যাচ্ছিল না।

সর্বশেষ