রাজনীতিতে চলছে রাজপথ দখলের লড়াই। শক্তির মহড়া দেখাতে ব্যস্ত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। একই দিনে দুদলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ।
কয়েক মাস ধরেই চলছে এ পরিস্থিতি। যেখানে বিএনপি, সেখানেই আওয়ামী লীগ-এ যেন স্থায়ী সংস্কৃতিতে রূপ নিয়েছে। সবশেষ শনিবার দেশের মহানগরগুলোয় কর্মসূচি পালন করে দুদল। পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে।
অন্যদিকে শান্তি সমাবেশের নামে এসব এলাকায় বড় শোডাউন করে আওয়ামী লীগ। দুদলের কর্মসূচিতে উত্তপ্ত ছিল ঢাকা বাদে দেশের সব মহানগর। কয়েক জায়গায় বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেন দলটির নেতারা। কোথাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্দেশ মেনে কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করা হয়।
এদিকে একই কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব সাংগঠনিক জেলায় পদযাত্রা করবে দলটি। ওইদিন রাজপথে থাকবে আওয়ামী লীগও।
আগামী নির্বাচন ও আন্দোলন সামনে রেখে রাজপথে চলছে দুদলের শক্তির মহড়া। রাজপথে গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকার পতনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে যুগপৎ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে বিএনপি। বিভাগীয় গণসমাবেশে নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়।
এমন পরিস্থিতিতে নড়েচড়ে বসে আওয়ামী লীগ। বিএনপিকে ফাঁকা মাঠ ছেড়ে না দিয়ে রাজপথে নামার সিদ্ধান্ত নেয় ক্ষমতাসীনরা। বিশেষ করে ডিসেম্বরে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে পালটা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে তারা।
এরপর যেদিনই বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে, সেদিনই মাঠে ছিল আওয়ামী লীগ। একই দিন দুদলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। শুরুতে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি হলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে উত্তাপ। বিচ্ছিন্ন সংঘাতের মধ্য দিয়ে চলতে থাকে দুদলের পালটাপালটি কর্মসূচি।
কিন্তু সবশেষ ইউনিয়ন পর্যায়ে দুদলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এভাবে একই দিনে দুদলের কর্মসূচি চলতে থাকলে রাজনীতি আরও সংঘাতময় হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের।
এদিকে একই দিন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে চলছে কথার লড়াইও। পালটা কর্মসূচি থেকে আওয়ামী লীগকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। তারা বলছেন, রাজনীতিকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে সরকার পরিকল্পিতভাবে এসব করছে।
পালটা কর্মসূচি বন্ধ না করলে কীভাবে তা থামাতে হয়, সেই চিন্তা করতে বাধ্য হব। তবে বিএনপির এ আহ্বানে গুরুত্ব দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। উলটো বিএনপিকে রাজপথে মোকাবিলার ঘোষণা দিয়েছে দলটি। আন্দোলনের নামে কোনো সহিংসতা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে থেকে তা প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে তারা বলছেন, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত তারা রাজপথে থাকবে।
শনিবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, পালটাপালটি নয়, প্রতিদিনই কর্মসূচি পালন করা হবে। কখনো সম্মেলন, কখনো গণসংযোগ, কখনো শান্তি সমাবেশ, কখনো সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলবে। আওয়ামী লীগ এ কর্মসূচি নিয়ে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকবে।