স্টাফ রিপোর্টার: বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এক যুবক ৭৮ হাজার টাকা বেতনের চাকুরী ছেরে দেশী মুরগী ও মাছের চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এখন তার মাসে আয় এক লক্ষ টাকার উপরে। তার এই সাফল্য দেখতে তার মুরগীর ফার্মে প্রতিদিন লোকজন ভিড় করছে। স্থানীয় ও সরেজমিনে জানা গেছে, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাড়পাইকা গ্রামের শশধর চন্দ্র বাড়ৈর ছেলে সমীরন বাড়েই দির্ঘদিন প্রাইভেট কোম্পানীর এরিয়া ম্যানেজার হিসেবে চাকুরী করতেন। পরের অধীনে কাজ করতে তার ভাল না লাগায় সে একদিন ভাবলেন নিজ গ্রামে গিয়ে নিজে কিছু করবেন। পরে ৭৮ হাজার টাকা বেতনের চাকুরী ছেড়ে গ্রামে এসে ১৫ শতাংশ জায়গার উপর ১০ হাজার টাকা খরচ করে তিনটি ছোট ঘর এবং চারদিকে নেট দিয়ে বেড়া দিয়ে ৩০ টাকা দরে ১০০ পিচ দেশি মুরগির বাচ্চা কিনে লালন-পালন করা শুরু করেন।
সেই একশত পিচ দেশি মুরগী থেকে বর্তমানে তার ফার্মে ১ হাজার দেশী মুরগী রয়েছে। বর্তমানে তার খামার থেকে প্রতিদিন প্রায় দুই শত দেশি মুরগী ডিম পাওয়া যায়। তার নিজস্ব ফার্মে ইনকিউবেটর মেশিন দিয়ে বাচ্চা ফুটিয়ে নিজে লালন পালন করে ও বাজারে ৪৫ টাকা দরে প্রতিটি বাচ্চা বিক্রি করে। তার দেশী মুরগীর খামারে উৎপাদিত দেশী মুরগী প্রতিকেজি ৫শত টাকা ও প্রতি হালি ডিম ৬০ টাকা দরে বিক্রি করে এবং দুইটি পুকুরে মাছ চাষ করে প্রতিমাসে এক লক্ষ টাকার উপরে আয় করে আসছে। খামারে দেশী মুরগীর রোগবালাই রোধে কচুরীপানা, এলোভেরা, শুকটি মাছের গুড়া, ধান, গমসহ মুরগীকে দেশীয় খাবার দেওয়া হয়। তার এই খামের সমীর বাড়ৈসহ দুই জন কর্মচারী মাসিক বেতনে কাজ করছেন। মুরগীর খামারে মুরগীগুলো ছোট মাঝারি ও বড়সহ চার স্তরে ভাগ করে রাখা হয়। রাতে অতিরিক্ত শৈত্য প্রবাহের সময় মুরগীর ফার্মে তাপ দেওয়ার জন্য ইলেট্রিক ভাল্ব জ্বালিয়ে রাখা হয়।
এব্যাপারে দেশী মুরগীর খামারের উদ্যোক্তা সমীরন বাড়ৈ সাংবাদিকদের বলেন, পরের অধীনে চাকুরী করতে ভাল না লাগায় একবছর পূর্বে গ্রামে এসে প্রথমে ১০ হাজার টাকা খরচ করে তিনটি ছোট ঘর এবং চারদিকে নেটজাল দিয়ে বেড়া দিয়ে ৩০ টাকা দরে ১০০ পিচ দেশি মুরগির বাচ্চা কিনে লালন-পালন শুরু করি। এছাড়াও দুটি পুকুরে মাছ চাষ করেছি। এতে প্রতিমাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করে আসছি। এঘটনায় উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা.মো.মনিরুজ্জামান তরফদার বলেন, উদ্যোক্তা সমীরন বাড়ৈর দেশী মুরগীর খামারের বিষয়টি আমাদের নজরে আসছে। আমরা সমীরন বাড়ৈসহ অন্যন্যা উদ্যোক্তাদের তৈরী ও স্বাবলম্ভী করাসহ সবধরণের সহযোগীতা করবো। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শুধু মাত্র চাকুরীর উপর নির্ভরশীল না হয়ে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করে আত্মনির্ভরশীল হওয়া যায় সেটা বেশি ভাল হয়। সে তার পরিবার, সমাজ, দেশ ও রাষ্ট্রের প্রতি ভাল ভুমিকা রাখতে পারে। এর উজ্জল দৃষ্টান্ত হচ্ছে সমীর বাড়ৈ।