মনোহরদীতে দেখা মিলল বানর জ্যোতিষী চিকিৎকের

সাইফুর নিশাদ, নরসিংদী প্রতিনিধিঃ

হঠাৎ-ই কচি কাচাদের শোরগোল। বানর আসছে বানর আসছে বলে। আস্তে আস্তে জড়ো হতে লাগলো কৌতুহলী কচি কাচা থেকে শুরু করে যুবক- যুবতী , মধ্যবয়সী ও বৃদ্ধরা।
দেখা মিললো মাঝারি বয়সের এক
অদ্ভুত আগন্তুকের। কাদে কবিদের ন্যায় ঝুলন্ত ব্যাগ ও হাতে শিকলে বাধা এক বানর।
যে কিনা হাত দেখা থেকে শুরু করে বিষ ব্যাথা, রাতে বিছানায় প্রসাব করা, কান পাকা,ভয় পাওয়া, ও অতিরিক্ত কান্না করা বাচ্চাদের চিকিৎসা করে। রোগ নির্ণয় করার ও অদ্ভুত এক পদ্ধতি। বানর জ্যোতিষীর মতই হাত দেখে বিভিন্ন ইশারা ইঙ্গিতে তার মালিককে বুঝিয়ে দেয় ব্যাক্তিটি কোন রোগে আক্রান্ত।

সেখানে উপস্থিত হওয়া নানা বয়সের মানুষদের মধ্যে কিছু সংখ্যক কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ভ্রাম্যমাণ বানর চিকিৎসক বলে আখ্যায়িত করেন। কিছু সচেতন মানুষ এসবকে সমর্থক না করে কুসংস্কার বলে সেখান থেকে ত্যাগ করেন।

এমন এক ভ্রাম্যমাণ বানর চিকিৎসকের দেখা মিলে মনোহরদী উপজেলার খিদিরপুর ইউনিয়নের মনতলা গ্রামের হাজী পাড়ায়৷

বানরকে নিয়ে ফেরি করা রফিক মিয়া(৫০)র সাথে আলাপকালে তিনি জানান,দীর্ঘ ২৩ বছর ধরেই তিনি এই পেশায় জড়িত। সূদুর খুলনা বিভাগের ঝিনাইদহ জেলা থেকে দেশের ৬৪ জেলায় তিনি এই বানরটিকে নিয়ে ঘুরে ঘুরে জীবিকা নির্বাহ কিরেন।পাশাপাশি গাছ গাছরার দ্বারা তৈরী আয়ূর্বেদিক মেডিসিন ও তিনি বিক্রি করে থাকেন। দৈনিক চারশ,পাচঁশ কিংবা কোনদিন হাজার টাকা ও আয় করেন। রাগ যাপন করার কথা জিজ্ঞাসা করলে রফিক মিয়া জানান,যেখানেই রাত সেখানেই কাত। পথি মধ্যে কোন না কোন বাজারে খাবারের হোটেলে কিছু টাকার বিনিময়ে রাত পার করেন।

তারও রয়েছে অদ্ভুত এক কাহিনি কেননা, মূলত বানর চিকিৎসকের ভূমিকা পালন করে থাকেন।
রোগীর হাত দেখে বলে দেন তিনি কি রোগে আক্রান্ত। বানর ও তার মালিক রফিক মিয়ার মধ্যে কথোপকথন করতেও দেখা যায়৷ হাত দেখানো ব্যাক্তিটির রোগ ভালো হলে বানর চিকিৎসা করেন এবং বানরের সামনে রাখা গাছ গাছরার মেডিসিন বানর-ই দেখিয়ে দেন। যদি উক্ত চিকিৎসা বানরের সাধ্যে কুলোয় তবে করেন নতুবা মাথা নেড়ে না করে দেন।

এবং হাত দেখানো ব্যাক্তিটির কাছ থেকে নির্ধারিত ১০ টাকাও নেননা যদিনা বানর চিকিৎসা করেন। হাত দেখা শেষে রোগীকে সালাম ও প্রদর্শন করেন বানর।

সেখানে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে জমিলা খাতুন (৬০) বাত ব্যাথায় আক্রান বহুদিন যাবত।
অনেক আগের মানুষ বলে এসব বিশ্বাস করে থাকেন। এবং তিনি বানরকে হাত দেখানোর জন্যে সম্মতি প্রকাশ করেন। বানর হাত দেখে জানিয়ে দেন কোমড়ে ব্যথা যার চিকিৎসা বানরের দ্বারা সম্ভব নয়।

আগন্তুল রফিক মিয়াকে দেখা গেলো প্রস্থানের সময় বানরকে একটা ব্যাগে ঢুকিয়ে কাধে ঝুলিয়ে দিব্যি হেটে চলেছেন নতুন কোন কাস্টমারের খোজে।

সর্বশেষ