দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ

কমছে সবজির সরবরাহ, বাড়ছে দাম

 

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ
ঢাকার বাসিন্দা শাহনাজ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, হিসাব করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করি, তাও মাসে বিল আসে দেড় হাজার, দুই হাজার টাকা। টিভি, ফ্রিজ তো বন্ধ করেও রাখতে পারি না। এখন সরকার বিল আরও বাড়িয়েছি, কারেন্টের বিল তো আমার বাজেট ছাড়িয়ে যাবে।

লায়লা আঞ্জুমান নামে একজন বলেন, মাত্র এক সপ্তাহ আগেও ১২ কেজির যে এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডার ১৩০০ টাকায় কিনেছি, দুই দিন আগে সেটাই কিনতে হয়েছে ১৭০০ টাকা দরে। কোনো কারণ বুঝতে পারছি না। সরকারের নির্ধারিত দাম আছে তেরোশর নিচে, তাও সেটা দিতাম। এখন দোকানদাররা বলছে, ১৭০০ টাকার নিচে সিলিন্ডার নেই। এমনকি লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলপি গ্যাসের দাম সরকার নির্ধারণ করে দিলেও বরাবরই অভিযোগ ওঠে যে, বাজারে এর চেয়ে অনেক বেশি দাম নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এখন এলপিজি গ্যাসের দাম যেন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে। সব জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। গ্যাসেরও দাম এমন বেড়েছে যে, এখন চাইলেই যে আলু সিদ্ধ করে খাবো, তারও উপায় নেই।

অন্যদিকে গত বছর রেকর্ড পরিমাণে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর খাদ্যদ্রব্য, পরিবহন থেকে শুরু করে সব জিনিসপত্রের দাম এক দফা বেড়েছে। তার ওপর ডলারের বিনিময় মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে আমদানিনির্ভর অর্থনীতির বাংলাদেশে প্রায় সব জিনিসের দাম বেড়েছে, যার ভুক্তভোগী হচ্ছেন সীমিত বা নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ। মনোয়ারা বেগম নামে এক নারী তিন বাসায় কাজ করেন। এক বছর আগেও সেই আয়ে তার চলে যেত। কিন্তু এখন আর তার পক্ষে কোনোমতেই সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ডেইলি জিনিসের দাম বাড়ে, আমাদের বেতন তো ডেইলি বাড়ে না। মাছ, মাংস বাদ দিলাম, সবজি খাওয়াও তো কঠিন এখন। এই যে গ্যাসের দাম বাড়াইছে, বিদ্যুতের দাম বাড়াইছে, এখন তো আমাগো বাড়িঅলা ভাড়াও বাড়াবে। কয়দিন শহরে থাকতে পারবো জানি না।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম বেশি। তার সাথে সাথে যদি বিদ্যুতের, গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়, তাহলে মানুষের কষ্ট বাড়ে এবং তাদের জীবনমানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

তিনি বলছেন, বিশেষ করে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সাথে অনেক কিছুর সম্পর্ক আছে। ফলে এসব জিনিসের যখন দাম বাড়ে, তখন অন্যান্য পণ্যের দামও বেড়ে যায়। গত বছরের মূল্যস্ফীতির যে রিপোর্ট, তাতে একটা জিনিস স্পষ্ট হয়েছে, গত বছর যখন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলো, তখন থেকেই দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়তে শুরু করেছে। জিনিসপত্রের দাম এমনভাবে বাড়ছে যে, মানুষ পাল্লা দিয়েও খাপ খাইয়ে নিতে পারছে না।

সর্বশেষ