ভৈরবে ইউনাইটেড হাসপাতালে নার্সের রহস্যজনক মৃত্যু

এম আর ওয়াসিম, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ইউনাইটেড হাসপাতাল এন্ড অর্থোপেডিক সেন্টারে রিমা প্রামাণিক (২০) নামে এক নার্সের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। রিমা নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার মির্জাপুর ইউনিয়নের পিরিজকান্দির সেন্টু প্রামাণিক এর মেয়ে।সে ভৈরব জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্রী বলে জানা যায়। গত১১ জুলাই, সোমবার ভোরে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ২০৩ নাম্বার কক্ষে ওড়না দিয়ে ফ্যানের সাথে ফাঁসিতে ঝুলে ঘটনটি ঘটেছে বলে জানা যায়।
ঝুলন্ত লাশ নামিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মৃত্যুর আগে নিহত নার্স রিমা প্রামাণিক একটি চিরকুট লিখে রেখে যান। চিরকুটে নিহতের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় বলে জানাগেছে। ঘটনাস্থল থেকে ওই নার্সের একটি মুঠোফোনও উদ্ধার করে ভৈরব থানা পুলিশ।

সরজমিনে গিয়ে জানাগেছে, নিহত রিমা প্রামাণিক ভৈরবের সরকারি জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজের ইন্টারমিডিয়েট পড়ুয়া শিক্ষার্থী ছিলো। সে দুই বছর ধরে ইউনাইটেড হাসপাতালে এইড নার্স হিসেবে চাকুরী করতো। সে হাসপাতাল ভবনের ৫ম তলায় স্টাফ কক্ষে থাকতো অন্যান্য স্টাফদের সাথে। ঈদের আগে ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের জরুরি ফোন পেয়ে সে ঈদের আগের দিন শনিবার বিকেলে হাসপাতালে আসে বলে জানান নিহতের পরিবার।
ওই দিন শনিবার দিবাগত আনুমানিক ৩টার দিকে নার্সদের ইনচার্জ লিজার মাধ্যমে হাসপাতালের এমডি হানিফুর রহমান সুমনে সাথে কথা হয় ওই নার্সের। পরে ঘন্টা খানেক পর ৪টার দিকে এঘটনা ফাঁসিতে ঝুলে মারা গেছে বলে জানা যায়। এ ঘটনার খবর পেয়ে সকাল ৭ টায় হাসপাতালেআসে নিহতের স্বজনরা। খবর পেয়ে ঘটনার স্থলে নিহতের লাশ হাসপতালের ২০৩ নাম্বার কক্ষ থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করেসুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে থানায় নিয়ে যায় ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক রফিক। পরে থানা থেকে রিমার মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করা হয়। ময়না তদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ পরিবার বর্গের নিকট তুলে দেওয়া হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা এস, আই রফিক জানান, খবর পেয়ে সে ঘটনাস্থলে এসে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করেন। ফাঁসিতে মৃত্যু হলেও তাকে একই কক্ষের বেডে শোয়া অবস্থায় পান। ফ্যানের সাথে একটি লাল ওড়না ঝুলানো রয়েছে। নিহতের একটি চিরকুট পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।

উক্ত ঘটনায় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হানিফুর রহমান সুমন জানান, মেয়েটি খুবই ভালো ছিলো, হাসপাতালের সবাই স্নেহ করতেন। তার পুলিশে চাকুরি করার ইচ্ছে ছিলো। সুমন আরো বলেন যে গত শুক্রবার মেয়েটি চাকুরি করবেনা বলে একরি পদত্যাগ পত্র নিয়ে আসে। আমি তার পদত্যাগ পত্রটি ছিরে ফেলে দেয়। সুমনের বক্তব্য মতে তিনি ঘটনার দিনবসায় ছিলেন। বাসায় থাকা অবস্থায় মেয়েটি ফোন করে বলে সে ভোরে বাড়ি চলে যাবে। আমি তাকে বুঝিয়ে বলেছি অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে বাড়ি যেতেহবে । কিন্তু ঘন্টাখানেক পর নামে লিজা বামে হাসপাতালের অপর একজন নার্স ফোনে জানান রিমা গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করছে। দ্রুত হাসপাতালে এসে ডাক্তার দিয়ে প্রাথমিকভাবে চেষ্টা করি তাকে বাঁচাতে। কিন্তু বাঁচাতে পারিনি তাকে। পরে পুলিশ ও তাদের স্বজনদের খবর দেয়।
হাসপাতালের কোন অবহেলায় সে আত্মহত্যা করেনি বলে তিনি দাবি করেন। উক্ত ঘটনায় ১২ জুলাই মঙ্গলবার নিহতের পিতা সেন্টু প্রমানিক ইউনাইটেড হাসপতালের ব্যবসৃথাপনা পরিচালক হানিফুর রহমান সুমন ও নার্স লিজা কে আসামী করে ভৈরব থানায় একটি মামলা দায়ের করে। উল্লেখ্য যে ঘটনার দিন রাতেই হাসপতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুমন কে আটক করে জিজ্ঞোসা বাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

সর্বশেষ