দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভ্রমণ বিলাসের প্রবণতা বাড়ছে

দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভ্রমণ বিলাসের প্রবণতা বাড়ছে

দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভ্রমণ বিলাসের প্রবণতা বাড়ছে

 

ঢাকা ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ :

পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে প্রবেশযোগ্য করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার বিকাশ। বর্তমানে বাংলাদেশে পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে ভ্রমণযোগ্য করার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করার প্রচেষ্টা চলছে। কারণ দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সৌখিনতা ও ভ্রমণ বিলাসের প্রবণতা বাড়ছে। এটি খুবই ইতিবাচক একটি দিক।

বাংলাদেশের জনপ্রিয় পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন, সিলেট, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, টাঙ্গুয়ার হাওড়, সুন্দরবন ইত্যাদি । এর মধ্যে কক্সবাজারের সাথে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকদের যোগাযোগ ব্যবস্থা সমৃদ্ধ করা হয়েছে। ২০২১ সালে অ্যাকোয়াহলিক ট্যুরিস্ট ক্যারাভান নামক কক্সবাজার থেকে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভে একটি নতুন খোলা ছাদে দর্শনীয় বাস চালু করেছে। পর্যটকদের জন্য ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ রোডে সমুদ্র এবং পাহাড় একসাথে উপভোগ করার একটি চমৎকার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এই বাসগুলোতে পর্যটকদের  আরামদায়ক ভ্রমণসহ পর্যটন সম্পর্কিত বই সমেত একটি লাইব্রেরি্র ব্যবস্থা রয়েছে। পক্ষান্তরে, বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে উঠা এক টুকরো ছোট্ট দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের আধুনিকমানের যোগাযোগ ব্যবস্থা সেখানে ভ্রমণের  জন্য পর্যটকদের  আগ্রহী করে তোলে। ২০১৯ সালে, সেন্ট মার্টিনে প্রায় ১.৯৫ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটে।

চা বাগানের রাজধানী সিলেটে ভ্রমণের জন্য রয়েছে সড়ক ও আকাশপথের সু-ব্যবস্থা। বাংলাদেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মধ্যে একটি সিলেটে অবস্থিত। সিলেটে দর্শনীয় স্থান অগনিত, যেখানে পর্যটকদের যাতায়াতের জন্য স্থানীয় যানবাহন চলাচল করে। ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার জন্য উন্নত যানবাহনের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু সিলেট থেকে সরাসরি কক্সবাজার যাওয়ার জন্য সড়কপথে কোনও যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই যা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা (রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি), যেটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত, পাহাড় ও অরণ্যে ঘেরা জলপ্রপাত বেষ্টিত অঞ্চল। ঢাকা থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকলেও উন্নত পরিবহন ব্যবস্থার অপর্যাপ্ততা রয়েছে। এছাড়াও পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে ভ্রমনের জন্য সেখানকার যাতায়াত ব্যবস্থার অপ্রতুলতা আছে। যথাযথ যোগাযোগ ব্যবস্থা দেশি- বিদেশি পর্যটকের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিতকরণের ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশের একমাত্র রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল, সুন্দরবন; যা ইউনেস্কো কর্তৃক ‘বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান’ হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশী পর্যটকদের কাছেও এটি ঐতিহ্যমণ্ডিত স্থান হিসেবে খ্যাত। কিন্তু পর্যাপ্ত ও সুনিয়ন্ত্রিত যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে পর্যটকদের আনাগোনা তুলনামুলকভাবে কম। অথচ এই স্থানকে কেন্দ্র করে আমাদের পর্যটনকে আরও সমৃদ্ধ করা সম্ভব এবং দেশের মোট জি ডি পি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ব্যাপক সুযোগ করা সম্ভব।

২০২১-২২ প্রস্তাবিত বাজেটে ট্যুরিজমের জন্য প্রায় ৪,০৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। বর্তমানে সরকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। পর্যটকদের ভ্রমন আরও সহজতর করার লক্ষ্যে ঢাকা,চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দরের উন্নয়নের কাজ চলছে। এছাড়া ও বাগেরহাট খান জাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ, যশোর, সৈয়দপুর, বরিশাল এবং রাজশাহী বিমানবন্দরের সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নতকরণ করে দেশের পর্যটন খাত কে আরও সমৃদ্ধশালী করলে, বাংলাদেশ এই খাতে বিশ্ব দরবারে মডেল হিসেবে কাজ করবে।

লিখেছেন :তানজিলা আফরোজ মৌ, প্রভাষক, ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেনট বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্সটিটিউট অব আইটি

[wp-rss-aggregator template=”Default”]

সর্বশেষ