ভৈরব মুক্ত দিবস উপলক্ষে কালিকাপ্রসাদে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা

এম আর ওয়াসিম, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নে ভৈরব মুক্ত দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনাআলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের চকবাজারে ১৯ ডিসেম্বর ভৈরব মুক্ত দিবস উপলক্ষে ১৭ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকালে স্থানীয় সংগঠন ” সমাজ কল্যান যুব সংগঠন ” এই সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু। উক্ত সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেব উপস্থিত ছিলেন কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফারুক মিয়া। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মাসুদ রানা ভৈরব উপজেলা বি. আর. ডিবি. চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খাঁন, টাঙ্গাইল বি.আর.ডি.বি পরিচালক সাইফুল ইসলাম । এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো: আসলাম উদ্দিন মিলিটারী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল কবির, উপজেলা ছাত্র লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুমানুজ্জামান রুমানফকরুল আলম রতন, ও মোহাম্মদ শাহ্ আলম প্রমুখ।

ছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথিদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মহিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোরাদ খাঁন, সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার (অবঃ) মো: জিয়া উদ্দিন, যুবলীগের সবুজ মিয়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নজরুল আহমেদ বিপ্লব, সজল মিয়া, নাছির উদ্দিন মাষ্টার, কামাল উদ্দিন, লায়েছ মিয়া ও শ্রী কমল বাবু প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সুইজারল্যান্ড প্রবাসী ও বর্তমান কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী লিটন মিয়ার পৃষ্ঠ পোষকতায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও কালিকাপ্রসাদের প্রবাসীদের সহযোগিতায় দিন ভর নানা প্রতিযোগিতা মূলক অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন কারী বিজয়ীদের মাঝে পুরুস্কার তুলে দেন অতিথিবৃন্দরা। তাছাড়া উক্ত ইউনিয়নের প্রায় ২০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
এসময় বক্তৃতায় মুক্তিযোদ্ধারা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ মুক্ত হলেও ভৈরব মুক্ত হয় ১৯ ডিসেম্বর । ৫০ বছর আগে ভৈরবে পাক হানাদার বাহিনী অসংখ্য নারী-পুরুষ, আবাল-বৃদ্ধকে নির্বিচারে হত্যা করে ও মা-বোনদের ইজ্জত লুট করে। পাক হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালে সারা দেশের ন্যায় ভৈরবেও নারকীয় হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। ১৬ ডিসেম্বর পাক হানাদারদের প্রধান জেনারেল নিয়াজী তার দলবলসহ আত্মসর্মপন করলেও ভৈরব পাক হানাদার বাহিনী সেই খবর পায়নি।

ফলে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাক হানাদারদের সাথে ছোট খাটো সংঘর্ষ চলতে থাকে ভৈরবের মুক্তিযোদ্ধাদের। ১৯ ডিসেম্বর পাক হানাদারদের হাই কমান্ডের নির্দেশ পাওয়ার পর আত্মসর্মপনের পূর্ব মুহুর্তে তৎকালীন ন্যাশনাল ব্যাংক বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের রক্ষিত টাকা পয়সা লুটপাট করে নিয়ে ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়। ১৯ ডিসেম্বর তারা আত্মসর্মপন করতে বাধ্য হয়। হানাদার মুক্ত হয় ভৈরব। ভৈরবের মানুষ পাকিস্তানি পতাকাকে পদ দলিত করে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে। স্বাধীনতার মুক্তির স্বাদ লাভ করে ভৈরব। ভৈরবের মানুষ প্রতি বছরই এ দিনটিকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে।
সংবর্ধনা ও পুরুস্কার বিতরণ শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ভৈরব উপজেলা আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ মিজানুর রহমান কবির। অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনা ও সঞ্চালনায় ছিলেন উক্ত সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নিশাদুল ইসলাম আলিম ও উক্ত ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তানভীর আহমেদ রাসেল।গো

সর্বশেষ