ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে ২৫.৩৪ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন 

ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে ২৫.৩৪ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন 
ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে ২৫.৩৪ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন 
ঢাকা ৯ ডিসেম্বর ২০২১ :
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর একটি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রায় ২৫.৩৪ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে।ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় আজ ইন্স্যুরেন্স প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করা হয়েছে।  
মেসার্স ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি ডেল্টা লাইফ টাওয়ার, প্লট-৩৭, রোড- ৪৫ (দক্ষিণ) ও ৯০ (উত্তর), গুলশান -২, ঢাকা -১২১২ এ অবস্থিত। এর মূসক নিবন্ধন নং: ০০১৩২৩১০৩-০১০১। 
ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় ভ্যাট গোয়েন্দার উপ-পরিচালক জনাব মুনাওয়ার মুরসালীন এর নেতৃত্বে একটি দল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির জানুয়ারি/২০১৩ হতে ডিসেম্বর/২০১৭ পর্যন্ত তদন্ত করে।ভ্যাট গোয়েন্দার দল তদন্তের স্বার্থে দলিলাদি দাখিলের জন্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে তলব করে।এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক দাখিলকৃত বার্ষিক সি.এ. রিপোর্ট, দাখিলপত্র (মূসক-১৯) এবং বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক জমাকৃত ট্রেজারি চালানের কপি ও অন্যান্য দলিলাদি হতে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের আড়াআড়ি যাচাই করে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়।
এই প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি স্বাস্থ্য বিমার উপর ১,০৯,৭৬,০০১ টাকা পরিশোধ করেছে।কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ৯,৭৮,৫১,৯৫৫ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে।
এতে অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ৮,৬৮,৭৫,৯৫৪ টাকার ফাঁকি উদঘাটন করা হয়। এই ফাঁকির উপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২% হারে ১০,০১,১১,৮৫৩ টাকা সুদ হিসেবে প্রযোজ্য হবে।
তদন্ত অনুসারে নিরীক্ষা মেয়াদে সি.এ. ফার্মের রিপোর্ট মোতাবেক উৎসে ভ্যাট ৬,৩৪,০৭,৮০৩ টাকা পরিশোধ করেছে।কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাট এর পরিমাণ ছিল ৯,২২,৩৭,২৫২ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ২,৯৫,০৮,৫৮৯ টাকার ফাঁকি উদঘাটিত হয়। 
উৎসে কর্তনের উপর প্রযোজ্য এই ফাঁকিকৃত ভ্যাটের উপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২% হারে ৩,৪৪,৮৯,৬৯৭ টাকা সুদ টাকা আদায়যোগ্য হবে।
অন্যদিকে, তদন্ত মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটির স্থান ও স্থাপনার  ভাড়ার  বিপরীতে ৩,১৮,১৮,৬৯১ টাকা পরিশোধ করেছে।কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ৩,১৭,৫১,৫০৬ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ১২,৪৯,৭১৯ টাকার ফাঁকি উদঘাটন করা হয়।  
এই ফাঁকির উপরও ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২% হারে ১২,০৯,২৫০ টাকা সুদ টাকা প্রযোজ্য হবে। 
বর্ণিত তদন্ত মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটি সর্বমোট অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ ১১,৭৬,৩৪,২৬২ টাকা এবং সুদ বাবদ ১৩,৫৮,১০,৭৯৯ টাকাসহ সর্বমোট ২৫,৩৪,৪৫,০৬১ টাকা রাজস্ব পরিহারের তথ্য উদঘাটিত হয়।
তদন্তে আরো দেখা যায় যে, প্রতিষ্ঠানটি সরকারের ভ্যাট ফাঁকির উদ্দেশ্যে নানা ধরনের জালিয়াতি ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে, যা ভ্যাট আইন অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। 
আজ এসংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। 
তদন্তে উদ্ঘাটিত পরিহারকৃত ভ্যাট আদায়ের আইনানুগ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য প্রতিবেদনটি কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা উত্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।একইসাথে সংশ্লিষ্ট মূসক সার্কেল, বিভাগীয় দপ্তর, কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানের ওপর নিয়মিত নজরদারির জন্যও সুপারিশ করা হয়েছে।

সর্বশেষ