আড়াই বছর পর দায়িত্ব পেলেন নেতারা

আড়াই বছর পর দায়িত্ব পেলেন নেতারা

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের দুই বছরের মেয়াদ শেষ। এখন সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি করার কথা। কিন্তু সেদিকে না গিয়ে আড়াই বছরের মাথায় নেতাদের সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হলো। ৩০ অক্টোবর এ দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সাংগঠনিক দায়িত্ব বণ্টন নিয়ে ছাত্রলীগ নেতারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের একাংশ দায়িত্ব বণ্টনকে স্বাগত জানালেও আরেক অংশ মনে করছেন ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলন বিলম্বিত করার জন্যই মেয়াদোত্তীর্ণ কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের পর ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগে পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে দায়িত্ব পালনের আগেই ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর তারা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তাদের অব্যাহতির পর সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান যথাক্রমে আল নাহিয়ান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য। তিন মাস ভারপ্রাপ্ত থাকার পর ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তাদের ভারমুক্ত করে পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শোভন ও রাব্বানী দায়িত্ব পাওয়ার এক বছর পর ২০১৯ সালের ১৩ মে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সময়কাল ২ বছর। আর সে হিসাবে ২০২১ সালের মে মাসের ১৩ তারিখ শেষ হয়েছে এই কমিটির মেয়াদ। আর এই দুই বছরের সময়কালের মধ্যে চার নেতা সাংগঠনিক দায়িত্ব বণ্টন করতে না পারলেও মেয়াদ শেষে গত শনিবার কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের কোনো সভা না করে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে সাংগঠনিক দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। আর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা না করে দায়িত্ব বণ্টনের ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন পর দায়িত্ব বণ্টনকে স্বাগত জানান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাঁধন। তিনি যুগান্তরকে বলেন, দায়িত্ব বণ্টনের কারণে আশা করি সংগঠনে গতি ফিরে আসবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক মো. আল আমীন সুজন যুগান্তরকে বলেন, যদিও আমাদের মেয়াদ শেষ বা শেষের দিকে তবুও এ সময় দায়িত্ব পেয়ে আমরা খুশি।

এদিকে সম্মেলন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সৈয়দ মো. আরিফ হোসাইন যুগান্তরকে বলেন, দায়িত্ব যেহেতু দেওয়া হয়েছে আমরা দায়িত্ব পালন করব। আমরা যখন যে সাংগঠনিক জেলায় দায়িত্ব পালন করতে যাব তখন তারা যদি আমাদের প্রশ্ন করে, আপনাদের কেন্দ্রীয় কমিটিরই তো মেয়াদ নেই তাহলে আপনারা কি দায়িত্ব পালন করতে এসেছেন। আপনার সংগঠনের শীর্ষ নেতা আপনাদেরই যদি গলদ থাকে তাহলে আমরা কীভাবে সংগঠন চালাব। এই প্রশ্নের উত্তর যে কী সেটা আমি জানি না।

আরেক সহসভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষ। ছাত্রলীগের সম্মেলনের সময়ও পার হয়ে গেছে। এখন সম্মেলন নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা কিন্তু তা না করে বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সম্মেলনকে বিলম্বিত করার জন্য দায়িত্ব বণ্টনের নাটক সাজিয়েছেন।

সূত্র: যুগান্তর

সর্বশেষ