ই-বর্জ্যে পরিচালনার জন্য  বাংলাদেশে ব্যবহৃত পদ্ধতিগুলি অপর্যাপ্ত : উম্মে লাবিবা রাহা

ই-বর্জ্যে পরিচালনার জন্য  বাংলাদেশে ব্যবহৃত পদ্ধতিগুলি অপর্যাপ্ত : উম্মে লাবিবা রাহা

ই-বর্জ্যে পরিচালনার জন্য  বাংলাদেশে ব্যবহৃত পদ্ধতিগুলি অপর্যাপ্ত : উম্মে লাবিবা রাহা

 

ঢাকা নভেম্বর ০১ ২০২১ :

 

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বি.আই.পি.) এর উদ্যোগে এবং জার্মান এজেন্সী ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জিআইজেড) বাংলাদেশ এর  সহযোগিতায় Planning for Inclusiveness and Sustainability in Post Pandemic Era (মহামারী পরবর্তী কালে অন্তর্ভূক্তিতা ও স্থায়িত্বশীলতার জন্য পরিকল্পনা) প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিগত ৩০ অক্টোবর ২০২১ তারিখ থেকে সপ্তাহব্যাপী চলমান নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন (আইকার্প) ২০২১ এর  চতুর্থ ভার্চুয়াল অধিবেশনঃ সুষম উন্নয়েনের জন্য গ্রামীণ পরিকল্পনা ও  আঞ্চলিক উন্নয়ন ১ নভেম্বর ২০২১ তারিখে ভার্চুয়াল জুম প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়। অধিবেশনটি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বি.আই.পি.) এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক পেইজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

ঢাকা বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা প্রোজেক্ট এর ডেপুটি টিম লিডার খন্দকার নিয়াজ রহমান এর সঞ্চালনায় এবং সভাপতিত্বে এই অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এশিয়ান ডিজাস্টার প্রিপেয়ারডনেস সেন্টার এর পক্ষ থেকে ড রিশিরাজ দত্ত  এ অধিবেশনে বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক নিলোপাল অদ্রি এবং টিলার এর সিইও মোঃ তামজিদুল ইসলাম ।

এছাড়াও অধিবেশনের মনোনীত প্রবন্ধ হিসেবে Assessing Spatial Flood Vulnerability of Greater Rangpur Region in Bangladesh Using GIS: A Tool for Resilience Planning at Regional Scale প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন তাসিন ইসলাম হিমেল, Assessment Of Vulnerability to Fire Hazard of RDA Market In Rajshahi City প্রবন্ধটি উপস্থাপন করে মোঃ আবু সাদাত এবং E-waste management in Bangladesh: an overview  শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করে উম্মে লাইবা রাহা।

সেমিনারের শুরুতে মূল প্রবন্ধক এশিয়ান ডিসাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টার (এডিপিসি) এর ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট লিড ড. রিশিরাজ দত্ত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কৃষি প্রধান অঞ্চলে খরার প্রভাব তুলে ধরেন। এ অঞ্চল প্রতি বছর খরার প্রভাবে ৪০০ ইউএস ডলার সমপরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তিনি বলেন, ১৯৯৭-৯৮, ১৯৮২-৯৭ এবং ২০১৫ এর El Nino ইভেন্টগুলি পর্যালোচনা করে বলা যায়, ভবিষ্যতে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা আরো বাড়বে, বৃষ্টিপাত কমবে এবং প্রবল খরা কৃষিখাতকে আরো ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এডিপিসি, ইউনাইটেড নেশনস এর সাথে একটি যৌথ গবেষণায় এরুপ প্রবল খরার কারন চিহ্নিত করে ৫টি প্রস্তাবনা উত্থাপন করে, যেখানে প্রযুক্তিগত ব্যবস্থাপনার উপর জোর দেয়া হয়।

এসময় তিনি খরা প্রবণ অঞ্চলগুলো পর্যালোচনার জন্য এডিপিসির তৈরি MEKONG Drought Crop Watch সার্ভারের কথাও বলেন। এছাড়াও যেকোনো দেশ এ সার্ভার ব্যবহার করে আসন্ন খরা প্রতিরোধের জন্য ব্যবস্থা নিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন। ভিয়েতনাম ইতিমধ্যেই এ সার্ভার ব্যবহার করছে এবং লাওস ক্লাইমেট সার্ভার ফর এগ্রিকালচারেও এ সার্ভারের ব্যবহার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান।

সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপক আবু সাদাত তার উপস্থাপনায় রাজশাহী উন্নয়ন অধিদপ্তর এলাকায় স্থাপিত একটি মার্কেটে অগ্নিসুরক্ষা ব্যবস্থাপনার অনুপস্থিতির প্রতি আলোকপাত করেন।

তাসিন ইসলাম হিমেল তার প্রবন্ধে জি আই এস ব্যবহার করে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের বন্যা দূর্বলতা খুজে বের করেছেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন যতবেশি  বন্যা প্রবণ অঞ্চল তত বেশি দারিদ্র্যতা। বন্যার কারনে কৃষির ক্ষতি, জনগনের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে যার কারনে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রামের মত জেলা দারিদ্র্যতা থেকে অগ্রসর হতে পারছে না।একই কারনে তারা বিদ্যুৎ, আবাসন,স্যানিটেশন এর মত কাংখিত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পরিশেষে তিনি বন্যার দূর্বলতার অস্তিত্ব  দারিদ্র্যতার অস্তিত্ব ইংগিত করে বলে তার আলোচনা শেষ করেন।

উম্মে লাবিবা রাহা তিনি তার গবেষণা প্রবন্ধে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করার পাশাপাশি পরিবেশ এবং মানুষের  উপর ই-বর্জ্যের প্রভাব পর্যালোচনা করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন ই-বর্জ্যে পরিচালনার জন্য  বাংলাদেশে ব্যবহৃত পদ্ধতিগুলি অপর্যাপ্ত। তিনি আরও উল্লেখ করেন একটি টেকসই মডেল বাস্তবায়ন বড় সমস্যার সমাধান করতে পারে।

প্রবন্ধ উপস্থাপনা শেষে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক নিলোপাল অদ্রি সবাইকে সাধুবাদ জানিতে তার মতামত প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের বন্যাদুর্গত অঞ্চলের উন্নয়ন, অগ্নিসুরক্ষা ব্যবস্থাপনা এবং সফল ই-ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য সকল কর্তৃপক্ষের একটি সমন্বিত ও নির্দেশিত পরিকল্পনা থাকার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।

আলোচক তামজিদুল ইসলাম সেশনের প্রবন্ধ উপস্থাপকদের প্রশংসার মধ্য দিয়ে তার আলোচনা শুরু করেন। তিনি তাদের গবেষণা তরান্বিত করার জন্য কিছু গঠনমূলক  দিক নির্দেশনা দেন। তিনি উল্লেখ করেন বাংলাদেশে ই-বর্জ্যের পরিমাণ উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু ই-বর্জ্য রিসাইক্লিং এর  জন্য বেসরকারি ভাবে অনেক উদ্যোগ গ্রহন করা হলেও সরকারি ভাবে তার পরিমাণ কম। তিনি  আমাদের নগরকে আরও বাসযোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য সরকারি এবং  বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ই -বর্জ্যে রিসাইক্লিং এর জন্য একত্রে কাজ করার জন্য আহবান জানান।

পরিশেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সেমিনারের সমাপ্তি ঘোষনাকালে, ঢাকা বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা প্রজেক্টের ডেপুটি টিমলিডার খন্দকার নিয়াজ রহমান। তিনি যেকোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আমাদের গণমাধ্যমের সাথে সংযুক্ত হয়ে কৌশলগতভাবে পাওয়ার চেইন ভেঙে দিতে হবেবলে মন্তব্য করেন।

সর্বশেষ