বঙ্গবন্ধুর নামে প্রবর্তিত পুরস্কার সৃজনশীল উদ্যোক্তা তৈরি এবং শিল্পায়ন বিকাশে সহায়ক হবে : শিল্পমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুর নামে প্রবর্তিত পুরস্কার সৃজনশীল উদ্যোক্তা তৈরি এবং শিল্পায়ন বিকাশে সহায়ক হবে : শিল্পমন্ত্রী

 

ঢাকা ২৮ অক্টোবর ২০২১:

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর শিল্প পরিকল্পনা ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে শিল্পায়নের যে স্বপ্নযাত্রা শুরু হয়েছিল সেই স্বপ্নের সোনালি পথ ধরে তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্ব ও দিক-নির্দেশনায় দেশে বহুমুখী শিল্পায়নের ধারা জোরদার এবং বেসরকারি খাতে দক্ষতা ও গতিশীলতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার প্রবর্তন করা হলো। এ পুরস্কার প্রদানের লক্ষ্য হচ্ছে, শিল্প উন্নয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে স্মরণ করা। বঙ্গবন্ধুর নামে প্রবর্তিত এ পুরস্কার সৃজনশীল উদ্যোক্তা তৈরি এবং শিল্পায়ন বিকাশে সহায়ক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রাজ্ঞ নেতৃত্ব বাঙালি জাতিকে অন্ধকারের অমানিশায় আলোর পথ দেখিয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির ফলে বৈশ্বিক শিল্পায়ন ও অর্থনীতি যেখানে মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সফল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব নেতৃত্বের কাছে এটি একটি মিরাকল হলেও বাংলাদেশের জন্য এটি প্রতিষ্ঠিত বাস্তবতা। কোনো জাদুকাঠির স্পর্শে নয়, বরং এ দেশের মাটি ও মানুষকে নিয়ে দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এই দুঃসময়ে দেশের অর্থনীতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে শিল্পোন্নত দেশগুলোতে ঋণাত্মক জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অথচ বাংলাদেশ ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জিডিপি এবং বৈশ্বিক গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধির চেয়ে বেশি।

আজ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার ২০২০’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এবং এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট মোঃ জসিম উদ্দিন। এতে অন্যদের মধ্যে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্প উদ্যোক্তাগণ এবং শিল্প মন্ত্রণালয় ও দপ্তর এবং সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, বেসরকারিখাতে শিল্প স্থাপন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বিনিয়োগ উৎসাহিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে এ পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়েছে। এটি আলোকিত শিল্প উদ্যোক্তাদেরকে পণ্য বহুমুখীকরণ, আমদানিবিকল্প পণ্য উৎপাদন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী প্রযুক্তিনির্ভর পণ্য উৎপাদন, বাজার ব্যবস্থাপনা, রপ্তানি বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করবে।

শিল্প ক্ষেত্রে অবদান সাপেক্ষে প্রতিবছর বৃহৎ শিল্প, মাঝারি শিল্প, ক্ষুদ্র শিল্প, মাইক্রো শিল্প, হাইটেক শিল্প, হস্ত ও কারু শিল্প এবং কুটির শিল্পের সাথে জড়িত নির্বাচিত শিল্প উদ্যোক্তা বা শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার প্রদান করা হবে। বিদ্যমান জাতীয় শিল্পনীতিতে বর্ণিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী মোট সাত ক্যাটেগরির শিল্পের প্রতিটিতে তিনজন করে মোট ২১ জন শিল্প উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবছর (১ জুলাই-৩০ জুন সময়ের জন্য) এ পুরস্কার প্রদান করা হবে। এ বছর দুইটি ক্যাটেগরিতে যৌথভাবে দু’টি করে প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হওয়ায় মোট ২৩টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেয়া হয়। এগুলো হচ্ছে- বৃহৎ শিল্প ক্যাটেগরিতে ৪টি, মাঝারি শিল্প ক্যাটেগরিতে ৪টি, ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটেগরিতে ৩টি, মাইক্রো শিল্প ক্যাটেগরিতে ৩টি, হাইটেক শিল্প ক্যাটেগরিতে ৩টি, হস্ত ও কারু শিল্প ক্যাটেগরিতে ৩টি এবং কুটির শিল্প ক্যাটেগরিতে ৩টি।

১ম পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ৩ লাখ টাকা ও ২৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট, ২য় পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা ও ২০ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট এবং ৩য় পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা ও ১৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট দেয়া হয়। স্বর্ণের ক্রেস্টগুলো ১৮ ক্যারেট মানের স্বর্ণ দ্বারা নির্মিত। এছাড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত সকলকেই সম্মাননাপত্র প্রদান করা হয়।

সর্বশেষ